অভিজিত রাহুল বেপারী : শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের কাছেই চটপটি ও ফুচকা একটি মজাদার খাবার। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের কাছে এটি খুব প্রিয়।

এ কারণে শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনে এবং সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায় সকাল থেকে রাত অবধি চটপটি ও ফুচকার পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। কিন্তু টক পানীয় ছাড়া শুধু চটপটি ও ফুচকা খেতে কারোরই ভালো লাগবে না। সচরাচর টক তৈরিতে তেঁতুলের ব্যবহার হলেও অধিক লাভের আশায় দোকানীরা ক্ষতিকর মাত্রায় ব্যবহার করছেন সোডিয়াম সাইট্রেট নামক এক ধরনের রাসায়নিক।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর সামনে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে, সরকারি মহিলা কলেজ মোড়, শহরের কৃষ্ণচূড়া মোড়, বলেশ্বর সেতুসহ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দিনভর, ক্ষেত্রবিশেষে রাত ৯-১০ টা পর্যন্ত ফুচকা ও চটপটির রমরমা ব্যবসা চলে। বিদ্যালয় পড়ুয়া কোমলমতি শিশুরা মজাদার স্বাদ ও চটকদার উপস্থাপনে আকৃষ্ট হয়ে প্রতিদিন অস্বাস্থ্যকর ফুচকা-চটপটির সাথে টক হিসেবে সোডিয়াম সাইট্রেট খাচ্ছে ।

এক ফুচকা ব্যবসায়ী বলেন, যেখানে টক হিসেবে তেতুল ব্যবহার করলে সারাদিনে খরচ পরে দুইশত থেকে আড়াইশত টাকা, সেখানে মাত্র ২০-২৫ টাকা খরচা করে সাইট্রেট কিনলে সারাদিনের টকের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। আবার অব্যবহৃত তেতুলের টক সহজে নষ্ট হয়ে যায় এবং গন্ধ হয়, পক্ষান্তরে কয়েকটা তেতুলের বিচি মিশালে এ রাসায়নিক সুস্বাদু হয় এবং নষ্ট হয়না। এ কারণে অধিকাংশ ফুচকা ব্যবসায়ী এটা ব্যবহার করে।

সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক ছাত্রের অভিভাবক জনাব শচীদুলাল রায় বলেন, এই গরমে অস্বাস্থ্যকর উপায়ে তৈরি ফুচকা এবং এর সাথে টক হিসেবে ব্যবহৃত রাসায়নিক এর আকর্ষণ থেকে কোমলমতি শিশুদের রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে, যার ফলে শিশুদের স্বাস্থঝুঁকি বেড়ে চলেছে।

খাদ্য বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে সাইট্রিক এসিড থেকে তৈরি রঙহীন লবন ও টক স্বাদের এ রাসায়নিক ব্যবহারে মানুষের হৃদরোগ, লিভার সিরোসিস, কিডনি সমস্যা, এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে । সবকিছু জেনেশুনে তা ব্যবহারের মাধ্যমে সামান্য লাভের জন্য শত শত গ্রাহককে মৃত্যুর পথে ধাবিত করছেন অধিকাংশ চটপটি ও ফুচকা ব্যবসায়ী।

উদ্বিগ্ন অভিভাবকগণ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

(এআরবি/এএস/মে ১০, ২০১৬)