ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : লিচু মৌসুম শুরু হয়েছে ঈশ্বরদীতে। ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছে  এখানকার বাঁশ শিল্পের শ্রমিকরা। একটু কথা বলার ফুসরত নেই। দিন-রাত নারী-পুরুষ তৈরী করে চলেছেন বাঁশের ঝুড়ি। লিচুর রাজধানী বলে খ্যাত ঈশ্বরদীতে এবারে ২০০-২৫০ কোটি টাকার লিচু কেনা-বেচা হবে। লাল টসটসে রসালো লিচু সুমিষ্ট ও ভিন্ন স্বাদের।

ঢাকাসহ দেশের প্রায় সকল অঞ্চলেই ঈশ্বরদী লিচু প্রতিদিনই চালান হচ্ছে। লিচু অত্যন্ত আদুরে প্রকৃতির ফল । এছাড়া একটু বাতাসে লিচুর রং নষ্ট হয়। লিচুর রং ও লিচু সুন্দরভাবে বিভিন্ন স্থানে প্রেরণের ক্ষেত্রে ভাল প্যাকিং এর জন্য এই ঝুড়ি ব্যাবহার হয়।

প্রতিবারের মতো এবারেও ঈশ্বরদীর সাহাপুর, ছলিমপুরসহ কয়েকটি গ্রামে বাঁশের তৈরী লিচুর ঝুড়ি বানাতে ব্যস্ত । এমনকি ওই পরিবারগুলোর শিশুরাও ঝুড়ি তৈরির কাজ করছে। পরিবশে বান্ধব বিশেষ কায়দায় তৈরী এই বাঁশের ঝুড়ি ঈশ্বরদী ছাড়াও অন্যান্য লিচু উৎপাদন এলাকায় সরবরাহ হচ্ছে। বিভিন্ন আকারের এবং মানের এই ঝুড়ি ৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়।

ঝুড়ি তৈরির শ্রমিক জালাল হোসেন জানান, তার পরিবারের ৬ সদস্যই এখন এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত। লিচু মৌসুমে প্রায় তিন মাস এখানকার প্রায় শতাধিক পরিবার ঝুড়ি তৈরির উপর নির্ভরশীল। শ্রমিক বাবলু রহমান জানান, আগে বাঁশের উৎপাদন বেশী থাকয় দাম ছিল কম।

এখন বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই এই পেশা ছেড়েছে। তাপ প্রবাহে দেশী (আঁটি) লিচুর উৎপাদন ব্যাপক হারে কমে যাওয়ায় প্রথম ধাপে বেশী ঝুড়ি তারা কিক্রি করতে পারেনি। এই শ্রমিকদের নিজস্ব মূলধন না থাকায় বিভিন্ন মহাজনও এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে বলে তিনি জানান। এরমধ্যে প্লাষ্টিকের ঝুড়ি পাওয়া যাচ্ছে।

প্লাষ্টিকের ঝুড়ির দাম বেশী হলেও ব্যবহারে বিনষ্ট হয়না। পরিবেশ বান্ধব না হলেও এই ঝুড়ি একাধিক বছর ধরে ব্যবহার করা যায়। যেকারণে বাঁশের ঝুড়ি তৈরিতে যে খরচ হয়, সে অনুযায়ী দাম পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকরা বাঁশ শিল্প রক্ষায় শ্রমিকদের এই সমস্যাগুলো সমাধানে সরকারের সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

(এসকেকে/এএস/মে ১৬, ২০১৬)