শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ গ্রামের হত দরিদ্র দিনমজুর আব্দুল করিমের একমাত্র মেয়ে কণা খাতুন। কণার মা দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ দিন বিছানায়। মায়ের সেবা, সংসারের কাজকর্ম করে শত কষ্টের মধ্যে পড়ালেখা চালিয়ে গেছে। গারাদহ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে।

কণা অষ্টম শ্রেণীতেও জিপিএ-৫ পেয়ে বৃত্তি পেয়েছিল। তার ভবিষ্যতের স্বপ্ন লেখাপড়া শেষ করে সরকারি চাকুরি করতে চায়। লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে ম্যাজিষ্ট্রেৃট হতে চায় কণা। কিন্তু তার সে ইচ্ছা পূরণে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে দারিদ্রতা।

কণার সাথে কথা বলে জানাগেছে, দিনমজুর বাবা আব্দুল করিম তার দুই ছেলেকেও এসএসসি পর্যন্ত কষ্ট করে পড়ালেও কণার বড় ভাই ঢাকার একটি গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করে এইচএসসি পাশ করেছে। কণার বাবা আব্দুল করিম জানান, তার কোন ফসলি জমি নেই। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া এক টুকরো জায়গার উপর ঘর তুলে আছি। আমার সামান্য রোজগার আর কনার টিউশনির টাকা দিয়ে সংসার ও লেখপাড়ার খরচ চলেছে।

মেধাবী ছাত্রী হওয়ায় কণার আত্মীয়রা তাকে অনেক সাহায্যে সহযোগিতা করেছে। এ ভাবেই তার লেখাপড়া চলে।কনা বলে, সে যখন ছোট তখন তার মা অসুস্থ ছিল। টাকার অভাবে বাবা তার মাকে ভালভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি। মা এখনও অসুস্থ হয়ে বিছানায়। সংসারের কাজ কর্ম করে যে টুকু সময় পেয়েছি, সে সময় টুকু লেখাপড়ার কাজে লাগিয়েছি। প্রাইভেট পড়ার কোন সার্মথ্য ছিলনা। লেখাপড়া শেষ করে জীবনে অনেকেই অনেক কিছু হতে চায়। আমি চাই মানুষ ন্যায় বিচার পাক। তাই আমি ভবিষ্যতে একজন বিচারক হতে চাই।

গাড়াদহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছাত্তার জানান, কণা প্রথম থেকেই মেধাবী। সে অষ্টম শ্রেণির জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ কণাকে সাধ্য মত সাহায্য করেছেন। আমরা তার উচ্চ শিক্ষার সফতলা কমনা করি। কণা সুযোগ পেলে শুধু পরিবারেরই নয় সে দেশের মুখ উজ্জল করবে।

(এআরপি/এএস/মে ১৬, ২০১৬)