মেহেরপুর প্রতিনিধি : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের ধলা গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য ইমদাদুল হক, তার বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম এবং ছোট ভাই রুহুল আমিন হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি ও দু'জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক টি এম মুসা এ রায় দেন।

দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে গাংনী উপজেলার রাধাগোবিন্দপুর ধলা গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে মিনহাজ ওরফে দুখু মিয়ার ফাঁসি এবং একই গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে অসিম উদ্দিন ও মোবারক হোসেনের ছেলে তোজাম্মেলের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত অসিম উদ্দিন ও তোজাম্মেলকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।

একই মামলায় ৩২ জনের মধ্যে বাকি ২৯ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে মিনহাজ উদ্দিন ওরফে দুখু মিয়া ভারতে পলাতক রয়েছেন। সেখানে তিনি একটি হত্যা মামলায় ফাঁসির আসামি হিসেবে কারাগারে আটক রয়েছেন। অন্য আসামি অসিম উদ্দিন মালয়েশিয়ায় পলাতক রয়েছেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, কাথুলী ইউনিয়নের নির্বাচন নিয়ে এলাকায় আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সালের ৩১ আগস্ট রাত ৩টার দিকে ওই এলাকার ত্রাস দুখুর নেতৃত্বে প্রায় ৪০ জন সন্ত্রাসী ধলা গ্রামের মোসলেম আলীর ছেলে ইউপি সদস্য ইমদাদুল হক ওরফে ইন্দা, তার বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম এবং ছোট ভাই রুহুল আমিনকে ঘুমন্ত অবস্থায় ঘর থেকে টেনেহেঁচড়ে বাইরে এনে প্রথমে গুলি ও পরে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ রেখে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পরদিন সকালে পুলিশ তিন ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনার পরদিন জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী রেনুকা খাতুন বাদী হয়ে মিনহাজ উদ্দিন দুখু, তোজাম্মেল, অসিম উদ্দিন, আব্দুল মালেক, নাহারুল ইসলাম, আজিজুল হক, সাবদার আলী, কাবুল ইসলামসহ মোট ৩২ জনকে আসামি করে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গাংনী থানার এসআই মোরাদ আলী ও শফিকুল ইসলাম মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ৪০ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করলে বিচারক মিনহাজ উদ্দিন ওরফে দুখুকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার আদেশ দেন।

একই সঙ্গে পলাতক আসামি অসিম উদ্দিনকে আটকের দিন থেকে তার শাস্তি শুরু হওয়ার কথা উল্লেখ করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কাজী শহিদুল হক এবং আসামি পক্ষে খন্দকার আব্দুল মতিন ও ইব্রাহিম শাহিন আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন। আসামী পক্ষ উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

(এমআইএম/এএস/মে ১৯, ২০১৬)