রায়পুর, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ তাহেরিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পাশের শত বছরের পুরোনো একটি গণকবর ভেঙ্গে তা উপর মার্কেট নির্মানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার বাদজুমার পর মুসল্লিরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যাস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন।

জানাযায়, চরআবাবিল গ্রামের গনি হাওলাদার নামের প্রভাবশালী পরিবার প্রায় শত বছর আগে বাস্তুহারা মানুষের দাফনের জন্য প্রায় ২৫ শতাংশ জমি গণকবর হিসেবে দান করেন। সেই থেকে নাম পরিচয়হীন অসহায় মানুষদেরকে এ গনকবরেই দাফন করে আসছে। স্বাধীনতা সময় অন্তত ৬০জন ব্যক্তিকে এ গনকবরটিতে দাফন করা হয়। কিছুদিন আগেও নাম পরিচয় হীন এক ব্যক্তিকে কবর দেয়া হয়েছিল। মুসলমানদের বিভিন্ন দিবসে গনকবরকে উদ্দেশ্য করে স্থানীয়রা মিলাদ মাহফিল, জিয়ারতের আয়োজন করা হয়ে থাকে। গত কয়েকদিন ধরে গনকবরটির উপর মাটি ভরাট করে মার্কেট নির্মান শুরু করে হায়দর গঞ্জ হাজেরা হাসমতেরনেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। বিদ্যালয় কতৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে কবরের উপর মার্কেট নির্মান শুরু হতে দেখে গ্রামবাসী ও বাজারের ব্যবসায়ীরা গনকবরটি রক্ষা এবং মার্কেট নির্মানে বাধা দিতে এগিয়ে আসেন। এসময় আ’লীগের পরিচয়ধারী কয়েক নেতা এগিয়ে আসা লোকদের মারধর করতে তেড়ে আসে। নিরুপায় হয়ে ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের সহযোগীতা চেয়ে ফিরে যান।

হায়দরগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইজুদ্দিন মোল্লাসহ কয়েকজন জানান, দীর্ঘ দিনের গণকবর ভেঙ্গে মাকেট নির্মানে আমরা বাধা দিয়ে অপদস্ত হতে হয়েছে। প্রশাসন ও ইউপি চেয়ারম্যানকে ব্যবস্থা নিতে বলা হলেও তারা রহস্য জনক কারনে নিরব রয়েছেন।

এবিষয়ে চরআবাবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদ উল্যা (বিএসসি) বলেন, তিনিও স্কুল কতৃপক্ষকে গনকবরের উপর মার্কেট নির্মান করতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু নামধারী কয়েক আ’লীগ নেতার কারনে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।

যোগাযোগ করলে ওই বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সফিকুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি রেজুলেশন করে নিজস্ব জমিতে মার্কেট নির্মান করছে। বিদ্যালয় ভবনের পেছনের ১৫ শতাংশ জমিতে রয়েছে এ শত বছরের পুরোনো গনকবরটি। কিন্তু বিদ্যালয় উন্নয়নের জন্য মার্কেট নির্মান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আলম বলেন, শত বছরের পুরোনো গনকবরের উপর মার্কেট নির্মানের বিষয়টি গ্রামবাসী ও বাজারের ব্যবসায়রা তাকে অবহিত করেছেন। তিনি ইউপি চেয়ারম্যান, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও ব্যবায়ীদের কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

(পিকেআর/এটিআর/জুন ০৬, ২০১৪)