নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ লেবার আইন ২০০৬ না মেনেই এটিএন গ্রুপের প্রতিষ্ঠান অনলাইন নিউজ পোর্টাল এটিএন টাইমস ডটকমের কমপক্ষে ৪০ জন সংবাদকর্মীকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জয়া আহসান।

জানা গেছে, এটিএন টাইমস ডটকম নামের অনলাইন পোর্টালটির পরিচালক প্রখ্যাত অভিনেত্রী জয়া আহসানের প্ররোচণায় প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য পরিচালকরা নিয়ম বহির্ভূতভাবেই বিনা নোটিশে সংবাদকর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন সৈয়দ রুহুল হক, সৈয়দ সামিউল হক, চন্দন সিনহা ও জয়া আহসান।
ছাঁটাই হওয়া ৪০ জনই সংবাদকর্মী। অর্ধশতাধিক কর্মীর মধ্যে বিজ্ঞাপন এবং আইটি সেকশনের কর্মীদের চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এটিএন টাইমসের একজন সংবাদকর্মী জানান, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যম থেকে সংবাদকর্মীদের অধিক সুযোগ সুবিধা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে ডেকে এনে তাদের নিয়োগ দেয় এটিএন টাইমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বছর পেরোতেই চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই প্রতিষ্ঠানটির সব সংবাদকর্মীদের বেতন প্রদানে ব্যাপক অনিয়ম চলতে থাকে। বেতন-ভাতা নিয়ে অনিয়মের বিষয়ে কয়েকজন সংবাদকর্মী মুখ খুললে কর্তৃপক্ষের রোষানলে পড়ে চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।

এ অবস্থায়ও প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ সংবাদকর্মীদেরকে দফায় দফায় নানা ধরনের মিথ্যা আশ্বাস প্রদান করে প্রতিষ্ঠান চালিয়ে নিতে থাকে। প্রতিষ্ঠানটিকে ভালো পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কথা শুনিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে কর্তৃপক্ষ সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যেতে থাকে।

এই সংবাদকর্মী আরো জানান, বিভিন্ন অনিয়মের মধ্যেও সংবাদকর্মীরা কাজ চালিয়ে যেতে থাকলে চলতি মাসের ৩ জুন এটিএন টাইমস ডটকমের কমপক্ষে ৪০ জন সংবাদকর্মীকে মৌখিকভাবেই ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত জানায় কর্তৃপক্ষ।

মৌখিকভাকে ছাঁটাই হওয়া একাধিক সংবাদকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ভালো প্রতিষ্ঠান এবং ভালো বেতন ছেড়ে এটিএন নামের সুনামের কারণে আমরা এখানে নিয়োগপত্র নিয়েই যোগদান করি। কিন্তু রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে অর্ধশতাধিক সংবাদকর্মীর পরিবারকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলায় সবাই দুঃশ্চিন্তায় পড়েছি।

এ প্রসঙ্গে এটিএন টাইমসের সংবাদকর্মীরা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জয়া আহসানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কোন প্রকার যোগাযোগ করা থেকে বিরত থাকেন তিনি।

তারা আরো জানান, নিয়ম মেনে যদি আগে থেকেই ছাঁটাইয়ের ঘোষণা এবং এর কারণে যথেষ্ট ক্ষতিপূরণ দিতো তাহলে কিছুটা দুঃশ্চিন্তা কমতো। সবারই পরিবার-পরিজন রয়েছে। অতিদ্রুত সময়ে এক সঙ্গে এতোগুলো মানুষ অন্য জায়গায় চাকরি পাবে কি করে সেটাও কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত ছিলো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী অভিযোগ করে জানান, এটিএন টাইমস ডটকমের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমানকে আড়ালে রেখেই বিভিন্ন অনৈতিক সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়েই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা।

এটিএন টাইমসের এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অতিরিক্ত খরচের দোহাই দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। কেননা প্রতিমাসে ১০ লাখ টাকা বেতন এবং অন্যান্য খাতে খরচ হলেও তার চেয়ে বেশী টাকার বিজ্ঞাপন রয়েছে এটিএন টাইমসের ওয়েবসাইটে। আসলে খরচের জন্য এটি বন্ধ হচ্ছেনা। অন্য কারণে এটি বন্ধ করা হচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, রোজার আগমুহূর্তে কর্মী ছাঁটাইয়ের এমন সিদ্ধান্তে এটিএন টাইমসের সংবাদকর্মীদের বিপাকে ফেলেছে এই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ।


(ওএস/এটিআর/জুন ০৬, ২০১৪)