ধামইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর ধামইরহাট হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাজেদুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্ণীতি ও সাধারণ রোগীদের পাশাপাশি সরকারী কাজেও অসহযোগীতার অভিযোগ উঠেছে। থানায় মামলা সংক্রান্ত কোন মেডিকেল রিপোর্ট ৩ থেকে ৫ মাস পর্যন্ত আটকে রেখে অর্থদাবীর পাশাপাশি মামলার জট সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ফলে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি সরকারি কাজকর্মে ধ্বস নামতে শুরু করেছে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে প্রায় ২ ঘন্টা ধরে জরুরী বিভাগে কোন ডাক্তার ছিলেন না। এ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগী এবং মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে মেডিকেল রিপোর্ট নিতে আসা পুলিশ কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অবস্থাদৃষ্টে ধামইরহাট উপজেলায় এখন পুলিশ-ডাক্তারে যেন টাগ অব ওয়ার শুরু হয়েছে।
ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ সিকদার মোঃ মসিউর রহমান জানান, ‘ধামইরহাট হাসপাতালের সাবেক আরএমও বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত টিএইচএ্যান্ডএফপিওর দায়িত্বে থাকা ডা. মোঃ মাজেদুর রহমান সম্প্রতি হাসপাতালের প্রধান কর্মকর্তা হয়ে নিজেকে সর্বেসর্বা বলে মনে করছেন।
রোগীদের চিকিৎসা সেবার প্রতিও তাদের যেন গাফিলতির অন্ত নাই। মারামারিসহ বিভিন্ন মামলার বাদী ও আসামীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে সেখানে মেডিকেল রিপোর্ট না দিয়ে আদালতের নির্দেশ লাগবে, মামলার এফআইআর কপি লাগবে এমন নানা টালবাহনা করে হয়রানী করে থাকেন। গত ২৬ মে ধামইরহাট থানার মামলা নং-০৯, তারিখঃ ০৭/০৪/১৬ মোতাবেক দায়েরকৃত মামলার মেডিকেল রিপোর্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নিকট লিখিত আবেদনের মাধ্যমে চাইলে তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং পুলিশের প্রতি তার আস্থা নেই বলে মন্তব্য করেন।
পরবর্তীতে ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) আব্দুর রহমান নওগাঁর সিভিল সার্জন বরাবর তাগিদ প্রেরণ করলে সিভিল সার্জন তাৎক্ষনিকভাবে মেডিকেল রিপোর্ট দেয়ার জন্য ডা. মাজেদুর রহমানকে নির্দেশ দিলেও সেটাতেও তিনি কর্ণপাত করেননি এবং অদ্যাবধি রিপোর্টটি থানা পুলিশের নিকট সরবরাহ করেন নি।
এছাড়াও অনেক মামলার মেডিকেল রিপোর্ট পুলিশের কাছে না দিয়ে ফৌজদারী মামলার বাদী আগ্রাদ্বিগুন সরকারপাড়া গ্রামের রশিদাকে গোপনে একাধিকবার হাসপাতালে ডেকে এনে টাকা নিয়ে মেডিকেল রিপোর্ট (এম.সি) সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার বিকেলে হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাজেদুর রহমানের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোনে কিছু না বলে তার অফিসে যেতে বলেন। নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. মোজাহার হোসেন বুলবুল বলেন, অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত।
তবে টিএইচএ্যান্ডএফপিও ডা. মাজেদুর রহমানকে আগামী শুক্রবারের মধ্যে মামলার রিপোর্ট সরবাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডা. মাজেদুর ভাল মানূষ। তিনি নিয়মের বাইরে কিছু করতে চান না বলেই এমন ভুলবুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।
(বিএম/এএস/মে ৩০, ২০১৬)