মাগুরা প্রতিনিধি :ভাসুরের  মেয়ের  সাথে প্রেম করেছে ভাইয়ের ছেলে । এই অপরাধে মাগুরা  সদর উপজেলার বরই গ্রামে মাহফুজা খাতুন নামে এক গৃহবধূকে বারান্দার খুটির সাথে পায়ে শেকল দিয়ে তালা বেধে বুধবার দিনভর নির্যাতন চালিয়েছে স্বামী, ভাসুর, দেবরসহ শ্বশুর বাড়ীর লোকেরা।

দিনভর নির্যাতনের পর বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে সাংবাদিকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ নির্যাতিত গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নির্যাতনকারী স্বামী, ভাসুর, দেবররা পালিয়ে গেলেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে শ্বাশুড়ী কমলা খাতুনকে।

মাহফুজা খাতুন জানান, তার ভাইয়ের ছেলে হিরণ (১৮) এর সাথে ভাসুর মন্টু মিয়ার মেয়ে সোনিয়ার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে স্বামী, ভাসুরসহ পরিবারের লোকেরা এ ঘটনার জন্য তাকে দায়ী করে নানা ভাবে নির্যাতন করে আসছে। সর্বশেষ আজ বুধবার সকাল ১০ টার দিকে স্বামী শুকুর, ভাসুর মন্টু, দেবর নান্নু, অতিয়ার, জহির, শ্বাশুড়ি কমলা তাকে বেদম মারপিট করে। এক পর্যায়ে ভাসুর মন্টু অন্যদের সহায়তায় তার পায়ে শেকল বেধে ঘরের খুটির সাথে তালা মেরে রাখে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অভুক্ত অবস্থায় তালা মেরে রাখলেও তাকে সহয়তা করতে কেউ এগিয়ে আসেনি । এমন কি বার - বার জল খেতে চাইলেও কেউ এক গ্লাস জল পর্যন্ত দেয়নি।

মাহফুজার অভিযোগ বাপ-মা মরা ভাতিজাকে তার বাড়িতে আশ্রয় দেওয়াই মূলত তার অপরাধ। এতিম ভাতিজাকে তার বাড়িতে থেকে বিতাড়িত করতে না পেরেই মূলত খভাসুর মন্টু অন্যদের নিয়ে তার উপর এই নির্যাতন চালিয়েছে।

মাহফুজার একমাত্র ছেলে ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র মুস্তাফিজ জানায়, মা’য়ের উপর নির্যাতন ঠেকাতে গেলে তার নিষ্ঠুর বাবা তাকে লাঠি মেরে ফেলে দিয়েছে।

এক পর্যায়ে মাগুরা জেলা সদর থেকে সাংবাদিকরা গিয়ে পুলিশকে ফোন দিলে পুলিশ সুপার এহসান উল্লাহসহ জেলা পুলিশের উধর্বতন কর্মকর্তারা গিয়ে তালা ভেঙ্গে মাহফুজাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাজফুজার স্বামী শুকুর, ভাসুর মন্টুসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। তবে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শ্বাশুড়ি কমলা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে।
অভিযুক্ত মাহফুজার স্বামী শুকুর আলী জানান, মাাহফুজা আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ায় তাকে শেকলবদ্ধ অবস্থায় তালা মেরে রাখা হয়েছিল।

সদর থানার ওসি আজমল হুদা জানান, পুলিশ মাহফুজাকে উদ্ধার করেছে। শ্বাশুড়ি কমলা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।



(ডিসি/এস/জুন০২,২০১৬)