পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি : পীরগঞ্জে সরকারি দুটি খাদ্য গুদামে ১২৯ মে. টন নিম্নমানের চিটা ও মরা গম সংগ্রহ করলেন দুই খাদ্য কর্মকর্তা। সরাসরি কৃষকদের কাছে গম সংগ্রহের বিধান থাকলেও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ওই গম সংগ্রহ করা হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সুত্র জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে আবাদকৃত ১২৯ মে. টন গম কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করার জন্য উপজেলা খাদ্য গুদামের কাছে নির্দেশনা আসে। উপজেলা সদর গুদামে ৭৯ মে. টন ও ভেন্ডাবাড়ী গুদামে ৫০ মে. টন গম সংগ্রহ করার জন্য কৃষকদের তালিকাও করা হয়। কিন্তু কোন কৃষকই সরাসরি গম দিতে পারেননি। কৃষকদের নামে ব্যবসায়ী এবং দলীয় নেতারাই গুদামে গম দিয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে।

গত ৫ মে থেকে ৫ জুনের মধ্যে ওই গম সংগ্রহের সময় দেয়া হলেও ২৮ মে দুটি গুদামেই উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শহিদুল্লাহ্ মিয়া গম ক্রয়ের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম মান্নু, চৈত্রকোল ইউপির চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান সবুজ, ভেন্ডাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি, প্রধান শিক্ষক আজিজুল ইসলাম, চতরা ইউপি আ’লীগের সম্পাদক রেজওয়ানুল হক ননতুসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী দিনে পীরগঞ্জ গুদামে চতরা ইউপি আ’লীগের সম্পাদক রেজওয়ানুল হক ননতু এবং ভেন্ডাবাড়ী গুদামে বড়দরগা ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম গম প্রদান করেন। অনেক কৃষক জানেই না, অথচ তাদের নামে গুদামে দেয়া গম নিম্নমানের চিটা ও মরা রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা সদর ও ভেন্ডাবাড়ী খাদ্য গুদামের কয়েকজন শ্রমিক বলেন- কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি গম ক্রয় করা হলে ভাল মানের গম নেয়া সম্ভব হতো। কিন্তু গুদাম কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিম্নমানের চিটা ও মরা গম নিয়েছে। এখনই তদন্ত হলে এর প্রমান পাওয়া যাবে। ভেন্ডাবাড়ী গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিমাংশু কুমার বলেন- তালিকা অনুযায়ী গম সংগ্রহ করা হয়েছে। অনেক দেরিতে গম নেয়ায় গমের সাইজ (আকার) একটু ছোট হয়েছে। আজ পর্যন্ত সোমবার ৪৭ মে. টন গম সংগ্রহ হয়েছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শহিদুল্লাহ্ মিয়া বলেন- সরকারি নির্দেশ ও শর্ত মোতাবেক গম ক্রয় করা হয়েছে। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা এস. এম সাইফুল ইসলাম বলেন- গুদামে যে কেউ গম সরবরাহ করুক। উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির অনুমোদিত কৃষক তালিকা অনুযায়ীই গম নেয়া হয়েছে।

(জিকেবি/এএস/জুন ০৬, ২০১৬)