সাঁঝ বিকেলের গান

নদীটার পূব তীর ধরে
গুন টেনে চলেছি সেই কবে থেকে,
জোয়ার ভাটায়, কখনো চরায়,
কখনোবা গর্ভবতী নদী ঠেলে ঠেলে, কখনো ছাড়িনি রশি
টেনে গেছি, টেনে গেছি গুন
দিনরাত্রি একাকার করে

জরাজীর্ণ ঘাট, নদী পাড়ে উলটে রাখা
ভাঙা নৌকোর খোল, মন্দির সোপান,
ভাসান দেওয়া বিগ্রহের কাঠামো শরীর
কোনোটায় তখনো বা রঙ মাটি লেগে আছে
কোনো দেবী জ্বলজ্বলে চেয়ে আছে আকাশের দিকে...
পাশেই ভেসে আছে পচাগলা কুকুরের শব
শীর্ণ হাতে
ছড়ানো শিরার মতো শেকড় ছড়ানো
বুড়ো বট, ঝোপঝাড়, সবকিছু ঠেলেঠুলে
কখনো হাঁটুজল কখনওবা গলাজলে নেমে,
গুন টেনে গেছি এতটাকাল...

তুমি তো বলেছিলে-

আর কিছু দূর গেলে পরে মোহনার মুখ পাওয়া যাবে!
যেখানে,এপার ওপার একাকার হয়ে আছে?

জলের বুকেতে মিশে আছে জল!
জলেরা স্পর্ধায় ছুঁয়েছে আকাশ।

নদীর পশ্চিমের বুক লাল হয়ে আছে,
পূবের আকাশে ক্ষয়া ক্ষয়া চাঁদ।
সন্ধ্যাতারা জেগে গেছে আকাশের কোণে,
তবু কই, মোহনা আরও কতদূর মাঝি?
কত দূরে মিশে গেছে জল
দুরন্ত স্পর্ধায় আকাশের বুকে?