রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর চলন্ত মেইল ট্রেনের কেবিনে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার তিন মাস পর গতকাল শুক্রবার ভোরে ওই ছাত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ে থানা পুলিশ।

ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, নিহত ছাত্রীর মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে রেলওয়ে থানা পুলিশ শুক্রবার ভোরে জেলা সদরের খানগঞ্জ ইউনিয়নের বেলগাছির খোশবাড়ী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আনোয়ার মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে।

এ সময় হত্যার শিকার কলেজছাত্রী মর্জিনার মোবাইল ফোনটিও উদ্ধার করা হয়। তিনি আরো জানান, ওই হত্যার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রাজবাড়ী রেলওয়ে থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করে। তিন মাস পর মামলার অন্যতম আসামি হিসেবে আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হলো।

রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার আনোয়ার পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। সেই সঙ্গে মর্জিনার ঘাতকদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি আশা করেন, আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করাসহ ঘটনার মূল রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হবে। তবে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মর্জিনার পুলিশ কনস্টেবল স্বামী হেলাল মোল্লার জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, রাজবাড়ী জেলা সদরের মিজানপুর ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদপুর গ্রামের শুকুর মণ্ডলের মেয়ে মর্জিনা খাতুন রাজবাড়ী সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের এইচএসসির ছাত্রী ছিল। দুই বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সে মেজ। দরিদ্র পরিবারের মর্জিনার বিয়ে হয় জেলার কালুখালী উপজেলার মামুন মোল্লার সঙ্গে। বিয়ের পর মর্জিনার দরিদ্র বাবা প্রায় চার লাখ টাকা ব্যয় করে মামুনকে পুলিশে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। বিবাহিত মামুন ওই তথ্য গোপন করেই চাকরিতে যোগ দেন। যে কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে মর্জিনাকে স্বামীর বাড়িতে এখনো পাঠায়নি তার পরিবার। গত ১ মার্চ নকশিকাঁথা মেইল ট্রেনের কেবিন থেকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা মর্জিনার লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে থানা পুলিশ।


(ওএস/এটিআর/জুন ০৭, ২০১৪)