নন্দীগ্রাম(বগুড়া)প্রতিনিধি: ‘ভাই আমারে বাঁচান, আমারে মুক্ত করেন। আমি পাগল নই। এই আকুতি ছিলো পাগল সাব্যস্ত শিকলবন্দি মোজাফ্ফরের(৩৫)। নিজের ভাই সম্পত্তির লোভে তাকে শিকলে বন্দি করে রেখে ছিল ৮দিন ধরে। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের তুলাশন পশ্চিমপাড়ায় এঅমানবিক ঘটনা ঘটে।

গত মঙ্গলবার বিকালে থানার ওসি হাসান শামীম ইকবাল সরেজমিনে তুলাশন গ্রামে গিয়ে মোজাফ্ফর আলীকে শিকল বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে থানায় নিয়ে আসেন। সে ওই গ্রামের মৃত বয়েন উদ্দিনের ছেলে।

শিকলমুক্ত মোজাফ্ফর সাংবাদিকদের বলেন, পারিবারিক কলহ আর সম্পত্তির লোভে আমার ভাই মজিবরসহ বাড়ির লোকজন আমাকে পাগল সাব্যস্ত করে মাথার চুল কেটে হাতে-পায়ে শিকল দিয়ে ঘরে আটকে রাখে। আটদিন শিকলবন্দি হয়ে ঘরে আটক ছিলাম। পুলিশের সহায়তায় বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছি।

পুলিশের হেফাজতে আসার পর নির্যাতনের বর্ণনা দেয় মোজাফ্ফর। শিকলবন্দি করে ঘরে আটকে রেখে প্রায় প্রতিনিয়ত নির্যাতন করতো পাষন্ড ভাই মজিবর। বন্দি মোজাফ্ফরকে ঠিকমত খাবার না দেয়ায় সে দিনদিন অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। শুধু তাই নয়, তাকে দুর্বল করে রাখতে ইনজেকশনও দেয়া হতো। মোজাফ্ফরের ভাই মজিবর রহমান বলেন, আমার ভাই মানসিক ভারসম্যহীন। রয়েছে কিছু চরিত্রগত দোষ। তাকে বেঁধে না রাখলে আমরা আতঙ্কে থাকি। তবে মানসিক রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপত্রের প্রমাণ চাইলে তিনি বলেন, এই মুহুর্তে আমার কাছে কাগজগুলো নেই। হারিয়ে ফেলেছি। পাগল সাব্যস্ত মোজাফ্ফর বলেন, আমার ভাইসহ পরিবারের লোকজন সবই মিথ্যা বলছে। আমি পাগল নই, আমাকে পাগল বানানো হয়েছে।

এপ্রসঙ্গে থানার ওসি হাসান শামীম ইকবাল বলেন, সুস্থ মানুষকে পাগল সাব্যস্ত করে শিকলবন্দি করে ঘরে আটক রাখা হয়েছিল। খবর পেয়ে শিকলবন্দি অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে রেখে শিকল কেটে মুক্ত করা হয়। তবে এবিষয়ে সে এখানো কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


(এসিজিএ/এস/জুন ১৬,২০১৬)