কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় পাটজাত পণ্যের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। সেই সাথে ব্যাপক হারে বেড়েছে পাট চাষ। অর্থকরী ফসল হিসাবে পাট একটি অধিক লাভজনক ফসল। আর কুষ্টিয়ার ফসলী জমির দিকে তাকালে এখন চোখে পড়ছে পাট আর পাট।

কুষ্টিয়া জেলা পাট অদিপ্তরের মুখ্য পাট পরিদর্শক সোহরাব উদ্দিন বিশ্বাস জানান, বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছরে কুষ্টিয়ায় ব্যাপক হারে পাট চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। গতবছর কুষ্টিয়া জেলার ৬টি উপজেলায় মোট ৯১ হাজার ২ শত ৯৪ একর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছিলো। এবং উৎপাদন হয়েছিলো ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ৪ শত ৭০ বেল পাট।

বিগত বছরের তুলনায় জেলায় এবছর প্রায় শতকরা ১৫-২০ ভাগ পাট চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এবছর কুষ্টিয়া জেলার ৬ টি উপজেলায় মোট ১ লক্ষ ৩ হাজার ৭ শত ৬৪ একর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লক্ষ ১৮ হাজার ৮ শত ২০ বেল পাট।
এর মধ্যে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলায় ৬ হাজার ৪ শত ৪৬ একর, মিরপুর উপজেলায় ২১ হাজার ৭ শত ৩৬ একর, ভেড়ামারা উপজেলায় ১০ হাজার ৮ শত ৬৮ একর, কুমারখালী উপজেলায় ১৩ হাজার ৩ শত ৩৮ একর, খোকসা উপজেলায় ৯ হাজার ৩ শত ৮৬ একর এবং দৌলতপুর উপজেলায় ৪১ হাজার ৯ শত ৯০ একর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। সেই সাথে পাটের দাম ও ফলন ভালো হওয়ায় চাষীরা দিন দিন পাট চাষ বেশি করছে। সেই সাথে এবার পাটের দাম বিগত বছরের তুলনায় ভালো। গতবছর পাটের বাজার মুল্য ছিলো ১ হাজার ৮শত থেকে ২ হাজার টাকা। আর এবার ২ হাজার ৩ শত টাকা থেকে ২হাজার ৪ শত টাকা। তিনি জানান, “পণ্যে পাট জাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০” ও বিধিমালা ২০১৩ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে সারাদেশের মতো এ জেলায় অভিযান অব্যহত রয়েছে। এজন্য পাটজাত পণ্যের ব্যাবহার বাড়ছে। ফলে পাট চাষ দিনদিন বাড়ছে।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উজেলার পাট চাষী নাহার আলী জানান, আমি প্রায় প্রতিবছরই কমবেশি জমিতে পাট চাষ করি। গতবছর আমি ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। গতবছর আমি বিঘাপ্রতি ৯মন করে পাট পেয়েছিলাম। এবং সেগুলো আমি বাজারে ২০০০ টাকা দরে বিক্রি করেছিলাম। এ থেকে আমি প্রায় ৯০ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। সেই সাথে সেখান থেকে আমি প্রায় ২০-২২ মন পাটকাঠি পেয়েছিলাম। সেগুলো ২০০ টাকা মন দরে বাজারে বিক্রি করেছিলাম। তিনি আরো জানান, গত বছরে ৫বিঘা জমিতে পাট চাষ করে আমি প্রায় ৯৫ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। আর এবার পাটের বাজার দাম ভালো। তাই এবার আমি ৭বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। এবার ও ভালো ফলন পাবো বলে আমি মনে করি।

মিরপুর উপজেলার আমলা গ্রামের পাট চাষী রফিকুল ইসলাম জানান, আমি এবার ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। প্রতিবারই আমি পাট চাষ করি। তবে এবছর পাটের রোগবালাই নেয় বললেই চলে। আর পাটও বেশ ভালো হয়েছে। আশা করছি ভালো ফলন পাবো।


(কেকে/এস/জুন ১৬,২০১৬)