নিউজ ডেস্ক : আজ কবি নির্মলেন্দু গুণের ৭২তম জন্মদিন। ১৯৪৫ সালের ২১ জুন নেত্রকোনার বারহাট্টার কাশবন এলাকায় জন্ম এই কবির। তাকে আমরা নির্মলেন্দু গুণ নামে জানলেও তার মূল নামটি আরও বিশাল- ‘নির্মলেন্দু প্রকাশ গুণ চৌধুরী’।

১৯৭০ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রেমাংশুর রক্ত চাই’ প্রকাশিত হওয়ার পরই তিনি কবি হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এ গ্রন্থের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা হুলিয়া কবিতাটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় এবং পরবর্তী সময়ে এর ওপর ভিত্তি করে একটি পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়। এযাবৎ তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় অর্ধশত। তিনি একজন চিত্রশিল্পীও। কবিতার পাশাপাশি তিনি গদ্য এবং ভ্রমণকাহিনিও লিখেছেন।

তিনি ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি, ২০০১ সালে একুশে পদক এবং ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার অর্জন করেন।

কবির ছেলেবেলা কাটে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায়। বাবা সুখেন্দু প্রকাশ গুণ এবং মা বীণাপাণি। বাবা-মার তিন মেয়ে এবং দুই ছেলের মধ্যে নির্মলেন্দু ছোট ছেলে। চার বছর বয়সে মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা আবার বিয়ে করেন। নতুন মায়ের কাছেই লেখাপড়ার হাতেখড়ি ।

পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন। ১৯৬২ সালে দুই বিষয়ে লেটারসহ মেট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ পেয়েছিলেন। মেট্রিকের পর আইএসসি পড়তে চলে আসেন ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজে। মেট্রিক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্টের সুবাদে পাওয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কলারশিপসহ পড়ার সুযোগ পান। ১৯৬৪ সালে আইএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে ১১৯ জন প্রথম বিভাগ অর্জনকারীর মাঝে তিনিও একজন। বাবা চাইতেন ছেলে ডাক্তারি পড়বে। তিনি চান্স পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে। ভর্তি হতে পারেননি ঢাকায় দাঙ্গার কারণে। ১৯৬৯ সালে প্রাইভেটে বিএ পাস করেন।

স্বাধীনতার পূর্বে তিনি সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি প্রধানত একজন আধুনিক কবি। শ্রেণিসংগ্রাম, স্বৈরাচার-বিরোধিতা, প্রেম ও নারী তার কবিতার মূল বিষয় হিসেবে বারবার এসেছে। কবিতার পাশাপাশি গদ্যরচনায়ও স্বচ্ছন্দ বোধ করেন ।

নিজের লেখা কবিতা এবং গদ্য সম্পর্কে তার নিজের বক্তব্য হলো – ‘অনেক সময় কবিতা লেখার চেয়ে আমি গদ্যরচনায় বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করি। বিশেষ করে আমার আত্মজৈবনিক রচনা বা ভ্রমণকথা লেখার সময় আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি যে আমি যে গদ্যটি রচনা করতে চলেছি, তা আমার কাব্য-রচনার চেয়ে কোনো অর্থেই ঊনকর্ম নয়। কাব্যকে যদি আমি আমার কন্যা বলে ভাবি, তবে গদ্যকে পুত্রবৎ। ওরা দুজন তো আমারই সন্তান। কাব্যলক্ষ্মী কন্যা যদি, গদ্যপ্রবর পুত্রবৎ।’

(ওএস/এএস/জুন ২১, ২০১৬)