নড়াইল প্রতিনিধি : অব্যাহত নির্যাতনের মুখে নড়াইলের ৪টি শিয়া পরিবার। স্থানীয় ভূমিদস্যুদের কবলে পড়ে মারধোর,বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটের ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হলেও আসামীরা বীরদর্পে ঘুরে বেড়িয়ে সংখ্যালঘু পরিবারগুলোর উপর হুমকী অব্যহত রেখেছে। স্থানীয় একজন কাউন্সিলরের নেতৃত্বে চলা এইসব ঘটনার কোন সুরাহা করতে পারছে না পুলিশ।

ঘটনার ৭ দিন পেরিয়ে গেলে ও ধরা পড়েনি কোন আসামী। ভয়ে আর আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অসহায় ঐ সকল পরিবারের লোকেরা। এমনকি ঘটনার পরে সাংবাদিকদের খবর দেয়ায় ভূক্তভোগী পরিবারকে শাসিয়েছে স্থানীয় ওয়ার্ড় কাউন্সিলর মাহাবুব হোসেন।

সরেজমিনে কাশিয়াড়া গ্রামে দেখা গেছে, আসামী রবজেল ও সাফায়েত এর বাড়ি সংলগ্ন শিয়া সম্প্রদায়ের মঈনউদ্দীন শেখ এর নতুন টিনশেড পাকা বাড়িটি জনশূন্য। সাংবাদিক দেখে পরিবারের লোকেরা এগিয়ে এসে বাড়িটির ভাংচুর ও লুটপাটের অবস্থা দেখে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলে। কাশিয়াড়া পূর্ব পাড়ায় মঈনউদ্দীন শেখ এর পুরাতন বাড়ি, সাব্বির শেখ, সাজাহান শেখও আল আমীন শেখের বাড়ির আসবাবপত্র ভাংচুর এর পরে সেইভাবে পড়ে আছে। ভয়ে বাড়ির পুরুষেরা বাড়িতে থাকতে সাহস পাচ্ছেন না, উজিরপুর বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সারাদিন কাটিয়ে সেখানেই রাত কাটাচ্ছেন তারা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নড়াইল সদর থানার এস আই সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকে কাশিয়াড়া এলাকায় গিয়ে ভাংচুরের নমুনা সংগ্রহ করেছি। আসামীদের ধরার ব্যাপারে কয়েক দফা অভিযান চালানো হয়েছে। এলাকার প্রভাবশালীদের কারনে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না,আশাকরি দ্রুতই আসামী গ্রেফতার হবে।

ভাংচুর আর লুটকারীদের পক্ষ অবলম্বন করা নড়াইল পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড় কাউন্সিলর মাহাবুব হোসেন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, এরা (শিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা)অত্যন্ত খারাপ লোক,এরাই আগে গন্ডগোল শুরু করেছে। এরা এলাকাবাসীর নামে গালিগালাজ করেছে তাই এলাকার লোকেরা এদের বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। এদের বার বার ডেকে ও শালিশে পাওয়া যায়না।

নড়াইল সদর থানার ওসি সুবাস বিশ্বাস বলেন, ‘নড়াইলের কাশিয়াড়ায় কয়েকজন শিয়া সম্প্রদায়ের লোকের বাড়িঘর ভাংচুর হয়েছে, তবে স্থানীয়দের সাথে এদের আগে থেকেই জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। বাড়িঘর ভাংচুরের পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।এলাকার কাউন্সিলর এ ঘটনা মেটানোর চেষ্টা করেও শিয়া সম্প্রদায়ের লোকদের কারনে তা ব্যর্থ হয়েছে’।

নড়াইলের পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম জানান, ঘটনা ঘটার সাথে সাথে ভুক্তভোগীদের পক্ষে মামলা গ্রহন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ অত্যন্ত তৎপর রয়েছে। শিয়া সম্প্রদায়ের পরিবারগুলো নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে।

(টিএআর/এএস/জুন ২২, ২০১৬)