মো. নাসির উদ্দিন, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বংশীনগর গ্রামের ৫৫ বছরের বৃদ্ধা খোদেজা বেগম ছেলে হত্যার বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ছেলের শোকে কাতর খোদেজা ও তার পরিবারকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার মারপিট ও হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে আসামীরা। পুলিশ মনির হোসেন হত্যার দায়ে তার স্ত্রী কল্পনা আক্তার ও শাশুড়ী আছিয়া বেগকে গ্রেফতার করলে মুল আসামীরা রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

জানা যায়, বংশী নগর গ্রামের হাসান মিস্ত্রীর প্রবাসী ছেলে মনির হোসেন (২৭) এর সাথে দেলদূূয়ার উপজেলার ডুবাইল উত্তর পাড়া গ্রামের মোতালেব ওরফে মতুলীর মেয়ে কল্পনা আক্তারের ৫ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। এরমধ্যে তাদের ঘরে মনিরা আক্তার নামে দেড় বছরের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। মনির হোসেন ৭ বছর দুবাই দেশে প্রবাসী ছিল। গত ২ বছর আগে সে দেশে ফিরে আসে। মনির হোসেন বিদেশ থাকাকালিন সময়ে তার স্ত্রী কল্পনা আক্তারেরর নিকট বিভিন্ন সময় ৫ লাখ টাকা পাঠান।

দেশে আসার পর মনির তার স্ত্রীর নিকট সে টাকার হিসেব চান। এতে করে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। পরে কল্পনা আক্তার গত ২৫ মে তার পিতার বাড়ি ডুবাইলে চলে আসে। পরের দিন ২৬ মে কল্পনা আক্তার তার স্বামী মনির হোসেনকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডেকে তার পিতার বাড়িতে আনেন। মনির হোসেন আসার পর ৫ লাখ টাকার বিষয়টি নিয়ে ঝগড়া হয়।

পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই কল্পনার আক্তারের পরিবারের লোকজনসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা মনিরকে মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে মনিরের গলায় বিদ্যুতের তার পেচিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে বিষয়টি ধামা চাপা দিতেই মনিরের লাশ একটি ভ্যান রিক্সায় করে নাটিয়া পাড়ার রাইয়্যান ক্লিনিকে চিকিৎসার নাম করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে বৃদ্ধা খোদেজা বেগম তার মেয়ের জামাই মিন্টু মিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরে ক্লিনিকে ছুটে আসেন। বিষয়টি দেলদুয়ার থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন।

এ ঘটনায় নিহত মনির হোসেনের মা খোদেজা বেগম বাদী হয়ে কল্পনার ভাই সাইফুল ইসলাম, বাবা মোতালেব ও মা আছিয়া বেগমসহ কল্পনা আক্তারের নাম উল্লেখ্যসহ অজ্ঞাত নামা ৫/৬জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দিনই কল্পনা আক্তার ও তার মা আছিয়া বেগমে পুলিশ গ্রেফতার করলেও গত ১মাসেও মুল আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি। এদিকে আত্মগোপনে থাকা আসামীরা বিভিন্নভাবে মামলা তুলে নেয়ার জন্য খোদেজা বেগম ও তার পরিবারের লোকজনকে মারপিট ও হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। পুলিশকে বিষয়টি জানালেও পুলিশ বলছে, আসামীকে ধরিয়ে দিন অথবা খোঁজ খবর এনে দিন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইয়াসিন আরাফাত জানান, মুল আসামী সাইফুল ও তার পিতা মোতালেব ওরফে মতুলী পলাতক রয়েছে। তারা মোবাইলও ব্যবহার করছে না। যার করণে তাদের গ্রেফতার করতে পারছি না। তবে আশা করি অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের গ্রেফতার করতে পারবো।

(এমএনইউ/এএস/জুন ২৩, ২০১৬)