বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলার শীর্ষ সন্ত্রাসী, মাদক সম্রাট এবং কলেজ ছাত্রী হিরা আক্তার অপহরণসহ একাধিক মামলার গ্রেপ্তারী পরওয়ানা ভূক্ত আসামী ডিলার মিলন অবশেষে গ্রেফতার হয়েছে। শনিবার দুপুরে শরনখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মুজিবর তালুকদারকে উপজেলা সদরের রায়েন্দা বাজারে শের-এ বাংলা সড়কে ফেলে বেধড়ক মারপিট করার পরপরই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বিকেল এই শীর্ষ সন্ত্রাসীকে অপহরণ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতরে মাধ্যমে বাগেরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বাগেরহাট আদালতে গাড়ী ছিনতাই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এই শীর্ষ সন্ত্রাসী শরণখোলা থানায় কলেজ ছাত্রী অপহরণ, চাঁদাবাজি, মারামারিসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। বাজারের বাসিন্দা শাহজাহান ডিলারের ছেলে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মিলন ওরফে ডিলার মিলন গ্রেপ্তার হওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

শরণখোলার সকল অপকর্মের হোতা এই শীর্ষ সন্ত্রাসী মিলন গত ১৫ মে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাছানুজ্জামান পারভেজকে পিটিয়ে আহত করে। এর আগে ২৭ মার্চ জেলা ক্ষেমজুর সমিতির সভাপতি হায়দার আলী মাষ্টারের মেয়ে শরণখোলা ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী হিরা আক্তারকে অপহরণ করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ওই সন্ত্রাসী। এভাবে একের পর এক অপকর্ম করে চললেও কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায়নি। এমনকি তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্বেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার না করায় সে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। অপহরণ মামলার প্রধান আসামী হয়েও মিলন প্রকাশ্যে পুলিশের সামনে বীর দর্পে ঘোরা ফেরা করেছে। বিভিন্ন সময়ে সে থানার ওসিদের ম্যানেজ করেই নিজের ক্ষমতা জাহির করেছে।

কলেজ ছাত্রী হিরা আক্তারকে অপহরণের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদেরও দেখে নেয়ার হুমকি দেয় এই শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে মোটর সাইকেল ছিনতাইসহ একাধিক মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ান রয়েছে কিন্তু পুলিশের সাথে সখ্য থাকায় তাকে কখনোই পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। মিলন এলাকায় ফেনসিডিল, ইয়ারাবা সম্রাট হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। ক্ষতাসীন দলের স্থানীয় কতিপয় নেতার ছত্রছায়ায় মিলন মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। এলাকায় সংঘটিত বড় ধরণের সব অপরাধের নেপথ্যে এই মিলনের হাত রয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এই মিলন ও তার বাহিনী গোটা উপজেলার ত্রাস চালিয়েছে। মেম্বার প্রার্থীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছে। যারা চাঁদা দিতে রাজি হননি তারা তার হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। শরণখোলার জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে অনেক সম্মানীয় ব্যক্তি মিলনের হাতে কমবেশি লাঞ্ছিত হয়েছেন। বর্তমান সময়ে শরণখোলাবাসীর কাছে মূর্তিমান আতঙ্কে পরিনত হয়েছে এই মাদক সম্রাট মিজানুর রহমান মিলন ওরফে ডিলার মিলন।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আ. জািলল বলেন, ডিলার মিলন বর্তমান সময়ের শরণখোলার শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে অপহরণ, ছিনতাই একাধিক মামলারও ওয়ারেন্ট রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার কারায় শরণখোলার মানুষ কিছুটা হলেও শান্তিতে থাকতে পারবেন।

(এসএকে/পি/জুন ২৫, ২০১৬)