পিরোজপুর প্রতিনিধি : ঈদের নামাজ পড়তে গেলে নতুন পাঞ্জাবী আর নতুন টুপি না হলেই যেন নয়। ছেলে থেকে বুড়ো সকলের কাছেই পাঞ্জাবী আর টুপি অতি প্রয়োজনীয়। আর সেগুলো যদি হয় মনের রংয়ে রাঙ্গানো এমব্রয়ডারী করা তা হলেতো আর কথাই নেই। আর সেই মনের মত পাঞ্জাবী আর টুপি তৈরি হচ্ছে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে। ইতিমধ্যে এ পাঞ্জাবী ও টুপি নিজ এলাকা ছাড়িয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে।

আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে এর কদর বেড়ে গেছে বহুগুন। এ উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে মোট ২৭ টির মত কারখানা এবং দোকান রয়েছে। প্রতিটি কারখানায় ৭/৮ জন কারিকর কাজ করে থাকেন। সরেজমিনে উপজেলার ওইসব কারখানা এবং দোকান গুলিতে ঘুরে দেখা গেছে, বাহারী রংয়ের বহু ডিজাইনের চোখ ধাধানো পাঞ্জাবী ও টুপির পসরা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। পাঞ্জাবী ও টুপি তৈরিতে ব্যস্ত কারিকররা। পাঞ্জাবী তৈরি সম্পর্কে ছারছীনা টেইলার্সের মালিক হাফেজ মোঃ ফজলুল হক ও দীনিয়া টেইলার্সের মালিক মোঃ জাহিদ হোসেন জানান, প্রতিটি পাঞ্জাবী তৈরি করতে কাপড় ছাড়া ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। আর ক্রেতাদের কাছ থেকে ২৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত মজুরী রাখা হয়। টুপি তৈরি সম্পর্কে মাহবুব এ্যামব্রয়ডারী হাউসের সত্বাধীকারী মোঃ মাহবুব ও নেছারাবাদ দারুসুন্নাত ষ্টোরের মালিক মোঃ ছাইফুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা গেছে প্রতিটি টুপি তৈরি করতে কাপড়, বকরুম, সুতা ও কারিকরের মজুরীসহ ১০০ থেকে ১৭০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। আর তৈরিকৃত ওই সকল টুপি ১২৫ টাকা থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করা হয়। এছাড়াও ষ্পেশালভাবে তৈরিকৃত কিছু টুপি ৩০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। ব্যাবসায়ীরা জানান, তাদের তৈরিকৃত পাঞ্জাবী ও টুপি এ উপজেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডাক ও কুরিয়ারযোগে প্রেরণ করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যাবসায়ীদের অর্ডার অনুযায়ী পাঞ্জাবী ও টুপি সরবরাহ করে থাকেন। কারখানা মালিকেরা অভিযোগ করেন বর্তমানে নিম্নমানের চায়না টুপির কারনে তাদের বাজার নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়াও বিদ্যুতের লোডশেডিং সমস্যার কারণে ব্যাপক চাহিদা নির্ভর এ পাঞ্জাবী ও টুপির চাহিদা মেটাতে পারছেন না এখানকার ব্যাবসায়ীরা। এ ব্যাপারে কারিকররা জানান, সঠিকভাবে বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে একজন কারিকর প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ টি পাঞ্জাবী অথবা টুপি তৈরি করতে পারেন। পুরুষদের পাশাপাশি কিছু নারী কারিকররা পাঞ্জাবীতে হাতের কাজ করে থাকেন। আর এর জন্য প্রতিটি পাঞ্জাবী তৈরিতে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা এবং টুপি তৈরিতে ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত মজুরী পান। ঈদের কারণে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দিনে রাতে সমান তালে পাঞ্জাবী ও টুপি তৈরি করে চলছেন তারা।

(এআরবি/পি/জুন ২৯, ২০১৬)