আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি :বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলায় অবস্থিত সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিভাগীয় ছোটমনি নিবাস (বেবী হোম)-এর আশ্রিত শিশুরা বোঝেনা ঈদ কি ? ওদের জীবনে ঈঁদের আনন্দও আসেনা কখনও। এসব শিশুদের অনেকে নেই জন্ম পরিচয়, আবার পথশিশু হিসেবে ঠাঁই হয়েছে অনেকের এই ছোটমনি নিবাসে। বর্তমানে বেবী হোমে ৭ বছরের ননিচে আশ্রিত শিশু রয়েছে ১৭ জন।

বেবী হোমের উপ-তত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ জানান, সরকারি ভাবে ঈদের দিন শিশুদের বিশেষ খাবার সরবরাহর জন্য কর্তৃপক্ষ চিঠি দিলেও ওই চিঠিতে কোন বরাদ্দর কথা উল্লেখ করা হয়নি। তিনি আরও জানান, শুধু গৈলায় নয়; দেশের কোনও বেবী হোমের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্দ থাকেনা। স্থানীয়ভাবে বা প্রতিদিনের খাদ্যর সাথে সমন্বয় করে বিশেষ দিনে আশ্রিত শিশুদের বিশেষ খাবার পরিবেশন কতঅ বলা হয়েছে।

আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক তপন বসু জানান, ঈদের দিনে এতিম শিশুদের সরকারীভাবে খাবারের জন্য কোন বরাদ্দ না থাকায় আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ওই শিূদের বিশেষ খাবার পরিবেশনের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বেবী হামের উপ তত্ববধায়ক আবুল কালাম আজাদ জানান, এবছর স্থানীয় এনজিও হোমল্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এইচডিও)’র উদ্যোগে বেবী হোমে আশ্রিত শিশুদের ঈদের জন্য নতুন পোশাক সরবরাহ করা হয়েছে।

আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা বিভাগীয় ছোটমণি নিবাসে গিয়ে কথা হয় আশ্রিত ওইসব অনাথ শিশুদের সাথে। শিশুরা জানায়, “তাদের মায়ের আদর পেতে ভীষণ ইচ্ছে করে, আল্ল¬¬ায় তাদের কপাল থেকে সব কিছুই কেড়ে নিয়েছে।

সংশি¬ষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেরার রাংতা গ্রামের গম ক্ষেতে থেকে মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় নবজাতক কন্যা শিশু উদ্ধার করে স্থানীয়রা। চিকিৎসা শেষে তার ঠাঁই হয় এই বেবী হোমে। বরিশালের তৎকালীন জেলা প্রশাসক শহীদুল আলম শিশুটির নাম রাখেন “কুদরতী জান্নাত”। বর্তমানে তার বয়স দেড় বছর।

মঠ বাড়িয়া থেকে পাওয়া ৭ বছর বয়সী আল-আমিন তার পরিচয় ও ঠিকানা বলতে না পারায় ঠাঁই হয়েছে এখানে। বরিশাল থেকে উদ্ধার হওয়া সাত বছরের শারিরীক প্রতিবন্ধি আয়েশা চিকিৎসার মাধ্যমে এখন অনেকটাই সুস্থ বলে জানান আবুল কালাম আজাদ।

বেবী হোমে আশ্রিত শিশুদের বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাদের অনেকের বাবা-মা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। আবার অনেকের বাবা-মায়ের পরিচয়ও নেই। তাই বাবা-মায়ের সাথে ঈঁদের আনন্দ ভাগাভাগি করারও সুযোগ নেই ওদের। কোন দিন আসবেওনা হয়ত সেই সুযোগ! ছোটমণি নিবাসের আয়া শাহিদা আক্তার বলেন-“অনাথ ও এতিম শিশুদের ঈঁদের অনন্দ দিতে তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করেকরেন। ঈঁদের দিনে শিশুদের নিয়ে সময় কাটান তারা। শিশুরা যাতে মন খারাপ করে বসে না থাকে, সে জন্য আমরা তাদের সব সময় আনন্দ দিয়ে রাখি। ছোটমনি নিবাসের তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ঈঁদের দিন কেন্দ্রের অনাথ শিশুদের অনেকেরই মন ভারি থাকে। কেউ চুপচাপ বসে থাকে। কেউ সারাটাদিন ঘুমিয়ে কাটায়। তাদের এ অবস্থা দেখে আমাদেরও মন খারাপ হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, ছোটমনি নিবাসের আশ্রিত বেশির ভাগ শিশুই কুড়িয়ে পাওয়া। আবার অনেক শিশুকে জন্মের পর রাস্তায় ফেলে দেয়া হলে পুলিশের মাধ্যমে তাদের ঠাঁই হয়েছে ছোটমণি নিবাস বা বেবী হোমে।###



(টিবি/এস/জুলাই০১,২০১৬)