কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :  কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। স্রোতের টানে ভেসে যাচ্ছে ঘরবাড়ি। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পাকা ও কাঁচা সড়ক পানিতে ডুবে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

জেলায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের হিসেবে ৯টি উপজেলার ৫৩টি ইউনিয়নের ৫৯৭টি গ্রাম এখন পানির নিচে। এক লাখ ১০ হাজার পরিবারের প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নদীভাঙনের শিকার হয়েছে পাঁচ হাজার ৬০০ পরিবার। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র ও ধরলায় পাঁচ সেন্টিমিটার ‌এবং দুধকুমারে ২০ সেন্টমিটার পানি বেড়েছে।

বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামরী সড়ক, কুড়িগ্রাম-নাগেশ্বরী সড়কের আরডিআরএস অফিসসংলগ্ন অংশ এবং কুড়িগ্রাম-কালিগঞ্জ সড়কের মন্নেয়ারপাড় এলাকায় পাকা রাস্তায় পানি ওঠায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কুড়িগ্রাম-যাত্রাপুর সড়কে তিন দিন ধরে গরু ও পণ্যবাহী ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কৃষি বিভাগের মতে, পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রিস্ত হয়েছে প্রায় এক লাখ ৩৬ হাজার কৃষক।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, ২৪৪টি বন্যাকবলিত স্কুলের মধ্যে ১৮৮টিতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ৯টি স্কুল। এ ছাড়া ভাঙনের মুখে রয়েছে আরো ১১টি। জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব জানান, এ পর্যন্ত ৪০০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বিতরণ করা হয়েছে ১৯২ মেট্রিকটন এবং প্রাপ্ত ছয় লাখ টাকার মধ্যে তিন লাখ ৩৭ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। শুকনো খাবার এক হাজার প্যাকেট বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আরো ১৫ লাখ টাকা এবং ৫০০ মেট্রিকটন চাল চাওয়া হয়েছে।


(ওএস/এস/জুলাই ২৫,২০১৬)