আইজিপি’র নির্দেশে তদন্তে নেমেছে পুলিশ
স্বামীর নির্যাতনেই আগৈলঝাড়ার পাখির মৃত্যুর সত্যতা মিলেছে
আঞ্চলিক প্রতিনিধি(বরিশাল):স্বামীর নির্যাতনেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত বরিশালের আগৈলঝাড়ার শিরিন আক্তার পাখির লাশের ময়নাতদন্ত না করে দাফনের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহিদুল হক।
আইজিপি’র নির্দেশনা পেয়ে আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে পাষন্ড জঙ্গি স্বামীর নির্যাতনেই শিরিন আক্তার পাখির মৃত্যুর সত্যতা পেয়ে উর্ধতন কর্মকর্তার মাধ্যমে পুলিশ হেড কোয়ার্টারে তদন্ত রিপোর্ট প্রেরণ করেছেন।
সূত্র মতে, আগৈলঝাড়া উপজেলার কালুপাড়া গ্রামের ইউসুফ ফকিরের ছেলে নিহতের ভাই মনির উদ্দিন হাফিজ জানান, তার বোন শিরিন আক্তার পাখিকে গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী গ্রামের নুরুল ইসলাম সরদারের ছেলে রুহুল আমিন খোকনের সাথে সামাজিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পরবর্তী সময় যৌতুক হিসেবে খোকন ও তার পরিবারের সদস্যরা মোটা অংকের টাকা যৌতুক দাবি করে। এ টাকা দিতে না পারায় প্রায়ই তাকে (পাখি) নির্যাতন করা হত। সর্বশেষ একটি তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে চলতি বছরের ২৪ মার্চ পাষন্ড স্বামী রুহুল আমিন খোকন তার স্ত্রী পাখি বেগমকে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যার উদ্যেশ্যে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে। এর আগে খোকনের চাচাতো ভাই ছলেমানের ছেলে রুমানকেও বেধড়ক মারধর করে খোকন।
বাড়ির লোকজনে গুরুতর আহত গৃহবধূ পাখি বেগমকে উদ্ধার করে প্রথমে গৌরনদী ও পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তার (পাখি) অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ১৫ এপ্রিল গৃহবধূ শিরিন আক্তার পাখি মৃত্যুবরণ করার পর পরই ঘাতক স্বামী খোকন হাসপাতালে তার স্ত্রীর লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। ওই সব হাসপাতালেও ব্যাপক নির্যাতনের চিকিৎসার প্রমাণ রয়েছে।
সূত্র মতে, নিহত পাখির ঘাতক স্বামী প্রথমে তাবলিগ জামাতের সাখে জড়িত ছিল। পরে সে জঙ্গি গোষ্ঠির সাথে জড়িয়ে পরে স্ত্রী হত্যার পর নিথোঁজ হয়।
সূত্রে আরও জানা গেছে, গৃহবধূর মৃত্যুর পর ওইদিনই ঢাকার শাহবাগ থানায় এস.আই মোস্তাফিজ একটি সাধারণ ডায়েরী করেন (যার নং-৮৬৪)। ওই এসআই জিডি সূত্রে লাশের সুরাতাহাল রিপোর্ট তৈরি করলেও রহস্যজনক কারণে লাশের ময়নাতদন্ত করেননি।
নিহতের ভাই মনির উদ্দিন হাফিজ অভিযোগ করেন, এসআই মোস্তাফিজ তাকে ও তার বোন জামাতাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি সাদা কাগজে মুচলেকা রেখে লাশ বাড়ি নিয়ে দাফন করার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ময়নাতদন্ত ছাড়াই শিরিন আক্তার পাখির লাশ তার বাবার বাড়ি কালুপাড়া গ্রামে দাফন করা হয়।
এনিয়ে বিভিন্ন দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশের আইজিপি একেএম শহিদুল হক প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে ঘটনা তদন্তের জন্য আগৈলঝাড়া থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের পর থানা পুলিশের তদন্তে নির্যাতনেই গৃহবধূ শিরিন আক্তার পাখির মৃত্যুর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।
(টিবি/এস/জুলাই ২৬,২০১৬)