সোনার তরী(শিশু কিশোর সাহিত্য)
নাসের মাহমুদ
আষাঢ় শাওন
বিষ্টি পড়ে গাছের পাতায়
বিষ্টি পড়ে বিলে,
গাছ গাছালি দিচ্ছে ধুয়ে
আষাঢ় শাওন মিলে।
ঝম ঝমা ঝম শব্দ বাজে
বিষ্টি টিনের চালে,
ভেজা পালক একা শালিক
ঝিমোয় গাছের ডালে।
জানলা ধরে একটি কিশোর
ইচ্ছে ভরা বুক-
খোলা মাঠে দাঁড়াই গিয়ে
বিষ্টি তাকেও ধুক।
দেখা শালিক একা শালিক
ডাকি যখন শালিককে,
ভিজো নাকো তুমি যেনো,
বলে শালিক-মালিককে।
জগলুল হায়দার
প্রার্থনা
আশাগুলো
ঝরে পড়া বোটা হয়
ভালোবাসা
বাদলেরই ফোঁটা হয়
সন্ত্রাসে
সারাদেশ গোটা হয়-
নিরবধি
এক নদী কান্না;
জিম্মি বা জঙ্গি
ডেমড়া বা টঙ্গী
এ দু' ভাগে
এ ভূভাগে
লাশ কেউ চান না!
রব্বানী চৌধুরী
সত্যকথা
যাদের আছে সালাম রফিক
বাংলা মাতৃভাষা,
যাদের আছে মুক্তিযোদ্ধা
টিক্কা খানকে নাশা,
যাদের আছে বঙ্গবন্ধু
ডাকল খালি হাতে,
তাদের মনে ভয়টা কেন
রাখল দিনে রাতে?
রাখবে না।
এদেশেটাতে সন্ত্রাসীরা
থাকবে না।
জালিম জুলুম টিকবে না,
ইতিহাস দেখে দেখে শিখবে না?
শিখবে।
সত্য কথার বিনাশ নেই
সত্যকথা লিখবে।
মাসুদার রহমান
টাকা সব
টাকা কামা,
ও মামা- টাকা কামা,
টাকা হলে,
'বড়লোক' লোকে বলে,
টাকা সব -
রোসনাই উৎসব।
টাকা উড়ে,
অলি গলি ঢাকা জুড়ে।
টাকায় সুখ,
টাকায় স্মার্ট উজবুক।
টাকা জানে,
জীবনের কি যে মানে।
টাকা কামা,
যদি চাও লাল জামা।
ও মামা-
টাকা কামা, টাকা কামা
জুলফিকার আলী
মেঘের খেলা
খোকন সোনার মন আকাশে
নিত্য মেঘের খেলা,
মেঘমালা দেখতে দেখতে
কাটায় সারাবেলা|
ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি নামে
আকাশ বেজায় কালো,
গর্জন তুলে ডাকে মেঘ
ডোবে বিল-খালও|
পাটক্ষেতে স্বপ্ন আঁকে
নতুন ধানে চাষী,
বর্ষা মানে কাদা ভরা
পুকুর জলে ভাসি|
টাপুরটুপুর বর্ষা মেয়ে
দিচ্ছে গালে চুম,
প্রকৃতিতে সবুজ শোভা
কাড়ে চোখের ঘুম|
আব্দুস সালাম
বিপথগামী শিক্ষক
শিক্ষকেরা যুগে যুগে
সব সমাজেই নন্দিত
জঙ্গিদোসর হলে তারা
জাতি কি হয় নন্দিত?
শিক্ষকেরা মানুষ গড়েন
চলতে বলেন সুপথে
কীসের লোভে এখন তারা
পা বাড়াবেন কুপথে?
দেখতে হবে নাড়ছে কারা
পিছন থেকে কলকাঠি
দেশের সুনাম নষ্ট করে
করছে তারা সব মাটি।
শিক্ষক হলে বিপথগামী
দিতে হবে তার সাজা
ভাংতে হবে চিরতরে
তাদের কোমর আর মাজা।
সৈয়দ শরীফ
ইঁদুর-ছানা বিড়াল-ছানা
ইঁদুর-ছানা, বিড়াল-ছানা,
আসতে ঘরে করছি মানা!
ঘর কি আমার সরকারি?
ক্যান্ নষ্ট করিস তরকারী?
রাখবো বেঁধে আসলে ঘরে,
বেঁধে তোদের পিটবো জোরে!
যা যা এবার দৌড়ে পালা,
দিবি রে আর কত্তো জ্বালা?
ভদ্র হতে শেখ রে তোরা,
অভদ্রদের পেটাই মোরা!
কারো ঘরে যাবি না,
তরকারীও খাবি না!
আবার যদি খাস,
কাঁদলে তখন লাভ হবে না
মার খাবি ঠাস্ ঠাস্।
অালমগীর কবির
মনটা ছুটে
মনটা ছুটে সকাল সাঁঝে
গাঁয়ের মেঠো পথের বাঁকে,
খুঁটে খাওয়া পাখির ঝাঁকে;
ফিঙে দোেয়ল টিয়ের ডাকে।
মনটা ছুটে সকাল সাঁঝে
ঢেউ ছড়ানো মাঠের কাছে,
নদীর পিছু ঘাটের কাছে;
সবুজ-নীল হাটের কাছে।
মনটা ছুটে সকাল সাঁঝে
বাবার স্নেহ চাদর পেতে,
মায়ের বকা বাদর পেতে;
মধুর কথা আদর পেতে।
সোহেল রানা
ঐ দেখা যায় কাঠবিড়ালি
ঐ দেখা যায় কাঠবিড়ালি
ঐ সে গাছের ডালে
ঐ গাছেরই ফলটা পেড়ে
খায় সে ঘরের চালে।
ঐ দেখা যায় কাঠবিড়ালি
ঐ গাছেতে থাকে
ঐখানেতেই করে খেলা
খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে।
আহাদ আলী মোল্লা
বর্ষাকালের অনুভূতি
ঢাকলো আকাশ মেঘে মেঘে
নামলো হঠাৎ বিষ্টি-
টিনের চালে নূপুর বাজায়
আহা বেজায় মিষ্টি।
আগান বাগান ভিজে ভিজে
টাপুর টুপুর ছন্দ কী যে
তোলে;
আনন্দে তাই গাছগাছালি দোলে।
রিমঝিমিয়ে বিষ্টি পড়ে
বিষ্টি গুঁড়ি গুঁড়ি,
বর্ষাকালের অনুভূতির
কার সাথে হয় জুড়ি?
ইউসুফ রেজা
জাঁদরেল সমালোচক
সদ্য লেখা কাব্য হাতে
পুরান ঢাকার গলিতে
ইতস্তত হাঁটতে ছিলাম
লজ্জা কি আর বলিতে,
আমার হাতের কাগজ নিয়ে
গেন্ডারিয়ার বান্দরে
অশিক্ষিত নয় সে মোটেও
এই রকমই ভান ধরে।
খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ে
আমার হাতের লেখা
অসম্ভব এ কান্ড আমার
নিজের চোখেই দেখা
খুঁটে খুঁটে দেখতে থাকে
প্রত্যেকটা শব্দ
তাও ভাবিনি বাঁদর আমায়
করবে এমন জব্দ।
যেই দেখেছে ঐ কবিতায়
নাই ছন্দ মিল
ছুড়ে ফেলে মারতে আসে
আমার পিঠে কিল।
লম্বা নখের আঁচড় কাটে
মুখের মধ্যে খামচায়
বললো তোকে কবি বলে
এই দেশে কোন চামচায়?
সাক্ষী ছিলাম আমি এবং
সেই বাঁদরের ছানা
সবার জন্য পোস্ট করলাম
ওদের সেলফি খানা।
সম্পাদনা:-বদরুল হায়দার