নড়াইল প্রতিনিধি :এখন শ্রাবণের বর্ষাকাল। নড়াইলের খালে-বিলে পানিতে টই-টুম্বুর। এসময় বিল এলাকার মানুষের চলাচলের নিয়মিত একটি বাহন হলো তালের তৈরি নৌকা, যাকে আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় ডুঙ্গা। কোনো কোনো এলাকায় এটি কোষা নৌকা নামেও পরিচিত।

নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায় এখন তাল গাছের তৈরি ডুঙ্গার ব্যবহার চলছে। খাল আর বিল পাড়ের হাজারো মানুষের একমাত্র বাহন এ ডুঙ্গা।

গ্রামীণ জনপদের অতি প্রয়োজনীয় এই বাহন নদী থেকে খালে প্রবেশ করতে, বিল থেকে মাছ ধরতেই বেশি ব্যবহার হয়। আকারে ছোট আর চালাতে সহজ বলে ৫ বছরের শিশু থেকে বৃদ্ধ, মহিলারা পর্যন্ত এই বাহন অতি সহজে ব্যবহার করে থাকেন।

অতি প্রয়োজনীয় এই বাহনের কেনাবেচার জন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বসেছে ডুঙ্গার হাট।
নড়াইল-যশোর সড়কে তুলারামপুরের হাটটি নড়াইলের বড় ডুঙ্গার হাট। এখানে সপ্তাহে শুক্রবার আর সোমবার হাট বসে।

বর্ষার শুরু থেকে অর্থাৎ জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪ মাস এই হাটে ডুঙ্গা কেনা-বেচা চলে। ক্রেতার চাহিদা আর পরিমাপ বোঝে একেকটি ডুঙ্গা ১৫শ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
বর্ষার কারণে বিলে পানি বাড়লে তখন ডুঙ্গার চাহিদা বেড়ে যায়। এখানে প্রতিটি হাটে ৪০/৫০ টি ডুঙ্গা বেচাকেনা হয়।

আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তুলারামপুর হাটে ডুঙ্গা কিনতে আসেন কৃষকসহ অনেকে।
যশোরের অভয়নগর থেকে ডুঙ্গা কিনতে এসছেন রকিব মোল্যা। তিনি বড় সাইজের একটি ডুঙ্গা কিনেছেন সাড়ে ৩ হাজার টাকায়।

তিনি জানান, নৌকা দিয়ে সারা বছর চলাচল করা যায় না, তাছাড়া কম পানিতে ডুঙ্গা দিয়ে সব ধরনের কাজ যেমন বিলে মাছ ধরা,শাপলা তোলা, ঘুনি পাতার কাজ করা এবং পারাপারের জন্যও ডুঙ্গা লাগে।

ডুঙ্গার ব্যবসায়ী চর শালিখা গ্রামের সেলিম জানান, একেকটি ডুঙ্গা বিক্রি হয় ১২শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া তিনজন শ্রমিক একদিনে দুটি ডুঙ্গা তৈরি করতে পারে।
এ সব ডুঙ্গা চাচুড়ী, তুলারামপুর, দিঘলিয়াসহ বিভিন্ন হাটে বিক্রি করা হয়।

স্থানীয়রা বলেন, বিল আর খালের পানি কমে যাওয়ায় ধীরে ধীরে ডুঙ্গার ব্যবহার কমছে। খাল খনন করে বিলের পানি প্রবাহের গতি ঠিক রাখার দাবি এলাকাবাসীর।

(টিএআর/এস/জুলাই ২৭,২০১৬)