গাজীপুর প্রতিনিধি : শ্রীপুরে  স্ত্রী ও এক শিশুসহ তিনজনকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পর সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের যমুনা নদীতে লাশ বস্তাবন্দি করে ফেলে দেয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন কুমার পন্ডিতের নেতৃত্বে স্বামীসহ তিনজনকে আটক ও হত্যায় ব্যবহৃত গাড়ি জব্দ করেছে পুলিশ।

আটকৃতরা হলো- নিহত নাসরিনের তৃতীয় স্বামী ও সিরাজগঞ্জের বেলকুচি এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আল আমিন (৩২), একই এলাকার মাহবুবের ছেলে সহযোগি নয়ন মিয়া (২০) ও সহযোগী গাড়ির ড্রাইবার পাঁচবিবি থানার রফিকুল ইসলামের ছেলে রবিউল (২২)। এর আগে গত রবিবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে জাইমতিকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে শিশুসহ ওই দুই নারী নাসরিন ও মেহেরুন শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরে সম্ভব্য সকলস্থানে তাদের খোজাখুজির শেষে না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

এদিকে সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সিরাগঞ্জে যমুনা নদী থেকে শিশুসহ তিনজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে এমন খবর টিভিতে দেখে খোঁজ খবর নিতে শুরু করে নিহতের স্বজনরা। ফেইসবুকে নিহত ওই তিন জনের ছবি দেখে পরিবারের লোকজন তাদের ব্যাপারে কিছুটা নিশ্চিত হয়ে সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে গিয়ে মৃতদেহগুলো সনাক্ত করেন।

মৃতদেহগুলোর নাকে মুখে রক্তপাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতরা হলেন- গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার টেংরা গ্রামের ব্যবসায়ী বাদল মন্ডলের স্ত্রী নাসরিন মন্ডল (৩০), হাদিকুলের স্ত্রী মেহেরুন আক্তার (৪৮) ও তার পালিত নাতি শিশু জাইমতি (৪)। এদের মধ্যে মেহেরুনের ভাতিজি নাসরিন।

শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন কুমার পন্ডিত জানান, শ্রীপুর উপজেলাধীন টেংরা এলাকার নাসরিন আক্তারের প্রথম স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হলে একই এলাকার বাদল মন্ডলের সাথে দ্বিতীয় বিয়ে হয়। এরই মাঝে নাসরিন মাস্টার বাড়ি এলাকার রিজভি মিন মিসি বস্ত্রলায়ের ম্যানেজার আল আমিনকে তৃতীয় বিয়ে করে। গত ৩০ জুলাই দুপুরে নাসরিনের তৃতীয় স্বামী আল আমিন নাসরিনকে দ্বিতীয় স্বামীর বাড়ী থেকে ডেকে ঐ দোকানে নেয়। সেখানে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দোকানের কর্মচারী নয়ন মিয়ায় সহযোগিতায় আল আমিন নাসরিনকে স্বাসরোধ করে হত্যা করে। নাসরিনের ফুফু মেহেরুন আক্তার ও পালিত নাতী জাইমতি সাথে থাকায় তাদেরকেউ স্বাসরোধ করে হত্যা করে। এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এঘটনায় সাংবাদিকদের নিয়ে নিজ কার্যালয়ে প্রেস বিফিং করেছেন।

এসময় তিনি জানান, আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত গাড়ি (ঢাকা মেট্রো গ- ২৫৪১৪৪), গাড়ীর চালক রবিউলসহ তাদের আটক করেছে। এঘটনায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজগর আলী বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা [০১(০৮)১৬] করেছেন।

(আরএইচ/এএস/আগস্ট ০২, ২০১৬)