চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি :চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে গ্রাহকের নামে ব্যাংক থেকে ২৮ লাখ টাকা ঋণ তুলে আত্মসাতের দায়ে কৃষি ব্যাংক সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেনকে (৪৮) আটক করা হয়েছে।

ব্যাংকের গ্রাহক আব্দুল ওয়াহেদের (৫৮) অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার বিকেলে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরুল হাফিজের কার্যালয়ে হাজির হন মনোয়ার হোসেন। এ সময় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

আটক মনোয়ার হোসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দৌলাতদিয়াড় গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে তিনি আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ি কৃষি ব্যাংক শাখায় ফিল্ড সুপারভাইজার পদে কর্মরত রয়েছেন।

অভিযোগে প্রকাশ, ফিল্ড সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেন জীবননগর কৃষি ব্যাংক শাখায় চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত কর্মরত থাকা অবস্থায় ৪০ জন ঋণ গ্রহীতার নামে ভুয়া দ্বিতীয় ফাইল খোলেন। এর মধ্যে তিনি ৩৪ জন গ্রাহকের নামে ২৮ লাখ ১ হাজার ১১৭ টাকার ঋণ জালিয়াতি করে তুলে নিজের কাছে রাখেন। পরবর্তীতে তিনি বেশ কয়েকজন গ্রাহকের টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে ঋণ সমন্বয় করেন।

জীবননগর উপজেলার কয়া গ্রামের মৃত দাউদ মন্ডলের ছেলে আব্দুল ওয়াহেদের অভিযোগ, ফিল্ড সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেন তার নামে একটিতে ৯০ হাজার ও ভুয়া ফাইলে ১ লাখ ১০ হাজার মোট ২ লাখ টাকা ঋণ বরাদ্দ করে উক্ত টাকা তিনি নিজে আত্মসাত করেন। ঋণের টাকা না পাওয়ায় ওয়াহেদ হোসেন তার ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে ব্যর্থ হয়ে মনোয়ার হোসেনের পিছনে টাকার জন্য ঘুরতে থাকেন। এ অবস্থায় সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেন দুই কিস্তিতে তাকে ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে আব্দুল ওয়াহেদ জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য মনোয়ার হোসেনের নামে সমন পাঠান।

বুধবার মনোয়ার হোসেন ইউএনও অফিসে হাজিরা দিতে আসেন। এসময় মনোয়ার হোসেন তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ আংশিক স্বীকার করেন। অতঃপর মনোয়ার হোসেনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মনোয়ার হোসেন বলেন, ভুয়া ঋণের ফাইল খুলে টাকা তুলে ওই টাকা তিনি তার বাড়ি নির্মাণ কাজে ব্যয় করেছেন। পরবর্তীতে তিনি অধিকাংশ গ্রাহকের টাকা ব্যাংকে সমন্বয় করে দিয়েছেন বলেও জানান।

জীবননগর কৃষি ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক মনির উদ্দিন জানান, ফিল্ড সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেনের দুর্নীতির তদন্ত করতে একটি তদন্ত টিম ঢাকা থেকে ব্যাংকে এসেছেন। তারা তদন্ত কাজ করছেন বলে জানান তিনি।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত হোসেন জানান, মনোয়ার হোসেনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। লিখিত এজাহার পাওয়ার পর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরুল হাফিজ জানান, ব্যাংকে চাকরি করার সুযোগ নিয়ে মনোয়ার হোসেন অন্যের নামে ঋণ তুলে নিজের প্রয়োজনে খরচ করেছেন। কারো কারো ঋণের টাকা তিনি পরিশোধও করেছেন। এখন অনেকেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসছেন।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আরো অনুসন্ধান করছেন। মনোয়ার হোসেনকে আপাতত জীবননগর থানা কাস্টডিতে রাখা হবে। বৃহস্পতিবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



(টিটি/এস/আগস্ট ০৩,২০১৬)