আঞ্চলিক প্রতিনিধি(বরিশাল):ক্যান্সার প্রতিরোধে ভেষজ গুনসমৃদ্ধ উদ্ভিদ রুকোলা চাষ হচ্ছে এখন জেলার গৌরনদী পৌর এলাকার উত্তর পালরদী মহল্লায়। রুকোলা বাংলাদেশের আবহাওয়ায় চাষ হওয়া প্রথম উদ্ভিদ। ওই গ্রামের ভেষজ গবেষক মোঃ আহছান উল্লাহ ইতোমধ্যে রুকোলার পাতা দিয়ে রুকোলা বিকল্প চা এবং ডায়াবেটিকের জন্য একটি এনপি নাইন নামে প্রাকৃতিক খাবার তৈরী করেছেন। যা ইতোমধ্যে বাণিজ্যিক ভাবে বাজারজাতের মাধ্যমে এলাকায় ব্যাপক সারা জুড়িয়েছেন।

২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর গ্রামের ক্ষুদ্র প্রতিভাবান আহছান উল্লাকে প্রথম আবিস্কার করেন কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ। আহছান উল্লাহ জানান, তিনিই প্রথম ২০০৬ সালে ইটালী থেকে তার ঘনিষ্ঠজন মোহাম্মদ খেকান মেজর ও ফুয়াদ হোসেনের মাধ্যমে রুকোলার বীজ সংগ্রহ করে দেশে প্রথম এই উদ্ভিদটি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে এটি বাংলাদেশের আবহাওয়ায় সফলভাবে চাষ করা সম্ভব হলেও বর্ষা মৌসুমে ভিন্ন প্রক্রিয়ায় চাষ করতে হয়। যদিও এটি শীত পছন্দকারী উদ্ভিদ তার পরেও দেশে এটি বারোমাস চাষ করা সম্ভব। রুকোলা দেশে একটি অপার সম্ভাবনাময় কৃষিপণ্য।

রুকোলার বীজ দিয়ে ভোজ্য তেল বানানো যায়। যাহা মানব শরীরের জন্য বিশেষ উপকারি তৈল। রুকোলার ফুলে মধুও হয়। রুকোলা হচ্ছে সরিষা পরিবারের একটি বর্ষজীবী, দুর্বলকান্ড ও সবুজ পাতাবিশিষ্ট উদ্ভিদ।

ভারত এবং থাইল্যান্ডে এটা (রুকোলা) আরগুলা নামে পরিচিত। বীজই হচ্ছে বংশ বিস্তারের একমাত্র মাধ্যম। রুকোলার উৎপত্তি স্থান হচ্ছে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল। ইতালীতে রুকোলা রোমান কাল থেকে চাষ হয়ে আসছে। তাই ধারণা করা হয় ইতালীতেই রুকোলার উৎপত্তি স্থান। ইতালী থেকেই পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশে এর বিস্তার লাভ করে। বীজ বপনের একমাস পরেই পাতা সংগ্রহ করা হয়। রুকোলার পাতা রসালো, লম্বাটে ও খাঁজযুক্ত। শিকড় ছাড়া এ উদ্ভিদের সব অংশই যেমন-পাতা, ফুল ও বীজ খাবার উপযোগী। তবে পাতাই খাদ্য হিসেবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

রুকোলার সবুজ সতেজ পাতা সরাসরি কাঁচা খাওয়া যায়। রুকোলার স্বাদ হালকা ঝাল এবং ভাজা চিনা বাদামের ফ্লেবার আসে। রুকোলার এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যাহা মানব শরীরে যেকোন ক্যান্সার প্রতিরোধে সফলভাবে কাজ করে। চিকিৎসকদের মতে, ইতালীসহ ইউরোপের অনেক দেশের চিকিৎসকরা ক্যান্সার ও ডায়াবেটিকস রোগীদের প্রচুর পরিমানে কাঁচা রুকোলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

আহছান উল্লাহ রুকোলা দিয়ে একটি বিকল্প চা উদ্ভাবন করে চলতিবছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত শুরু করেছেন।


(টিবি/এস/আগস্ট ০৫,২০১৬)