আবু নাসের হুসাইন: করুনাময় আল্লাহুর নির্দেশে মা-বাবার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ পৃথিবীতে আগমন করেন। এটা সবার জানা রয়েছে। মানব জীবনের শুরু থেকেই তার বাবা-মায়ের আদর-সোহাগে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। শিশুর বয়স ১২ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে পর্যন্ত দুনিয়া ও পরকালের চিন্তা চেতনা তাদের মধ্যে থাকে না। সেই মূহুর্তটুকু সময় তারা খেলা-ধুলা নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

এসময় শিশুদের অন্যতম খেলা হচ্ছে তালের পাতা, কলার পাতা, নারিকেলের পাতাসহ বিভিন্ন গাছের পাতার তৈরি খুটিমুচি খেলার ঘর। প্রায় শিশুরাই লেখা-পড়ার দিকে মনযোগ না দিয়ে ঝুঁকে পড়েন খুটিমুচি খেলা নিয়ে। আগের দিনে শিশুদের খুটিমুচি খেলাটি গ্রামগঞ্জেই বেশি দেখা যেত। বৃষ্টি এলেও নিজেদের পাতার তৈরি ঘরের মধ্যে কয়েকজনে মিলে আনন্দ করতো। বৃষ্টিতে ভিজে যেত তারপরও তাদের আনন্দের সীমা ছিলো না।

আর ১২ বছর বয়সের পরে কিশোররা তাদের মা-বাবার চোখ ফাঁকি দিয়ে খুটি-মুচি খেলার পাশাপাশি ফুটবল, দাড়িয়াবন্দী, কানামাছি, মার্বেল, পঁয়সা ও চাড়া খেলায় মত্ত থাকতো। শৈশব ও কিশোর বেলায় এমনটা অহরহ চোখে পড়তো। মা-বাবার কড়া শাসন উপেক্ষা করে শিশুরা এই খেলা-ধুলা চালিয়ে যেতেন। সে জন্য পরিবারের বড়দের হাতে অনেক মারধর খেতে হতো শিশু-কিশোরদের। তবুও খেলা-ধুলার কথা ভুলতেন না তারা।

বর্তমানে অন্যান্য খেলাধুলার পাশাপাশি শিশুদের খুটি-মুচি খেলার তৈরি ঘর এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। হাঁরানো দিনের খেলা-ধুলা প্রায় ভূলে গিয়ে ক্রিকেট খেলায় মনযোগ দিয়েছে শিশু ও কিশোররা।

তবে গ্রামগঞ্জের দু-এক জায়গায় শিশুদের খুটি-মুচি খেলার ঘর এখনো চোখে পড়ে। তখন মনে পড়ে যায় ছোট্ট বেলার কথা। যেই দিন পিছনে যাবে, সেই দিন আগামীতে আর ফিরে আসবে না। ধারাবাহিক ভাবে একসময় শিশুদের হারানো দিনে খেলাধুলা বিলীন হয়ে যাবে। আসবে ভিন্ন ধরনের খেলা-ধুলা। সেই দিন শিশুদের কানামাছি, দাড়িয়াবন্দী, মার্বেল, পঁয়সা ও পাতার তৈরি খুটি-মচি খেরার ঘর শুধু স্মৃতি হয়ে থাকবে।





(এএনএইচ/এস/আগস্ট১২,২০১৬)