নিউজ ডেস্ক : আজ ১৭ আগস্ট বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রাহমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৬ সালের এই দিনে  চিকিৎসাধীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

কবি শামসুর রাহমান ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার মাহুতটুলিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে কবি, কথাশিল্পী, সাংবাদিক, গীতিকার, কলামিষ্ট। দীর্ঘ ছয় দশক কবি এসব ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাবলিল ধারায় লেখালেখি করে বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদান রাখেন। তার কবিতায় বাঙালি জাতির স্বাধীনতাপ্রাপ্তির চেতনার দীপ্তস্বর উচ্চারিত হলেও কবিতা ও সাংবাদিকতায় মৌলবাদবিরোধীতায় ছিলেন সোচ্চার। ধর্মান্ধতাকে আজীবন প্রচণ্ডভাবে ঘৃণা করেছেন। লিখেছেন প্রেম, দ্রোহ ও বিশ্বজনীনতা বিষয়ে অসংখ্য চিরায়ত কবিতা। যা আজও সকল বয়সের মানুষকে উজ্জীবিত করে। সর্বোপরি কবিতা রচনায় স্বাধীনতার কণ্ঠকে ধারণ করেন। এ কারণেই তার সৃষ্টিশীলতার বিশালতাকে বাংলা কবিতায় তাকে স্বাধীনতার কবি বলা হয়। শামসুর রাহমান বাঙালির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবিদের একজন এবং আমাদের চলার পথের পাথেয়।

শামসুর রাহমানের প্রথম কবিতার বই ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে ’ প্রকাশ পায় ১৯৬০ সালে। এরপর ষাট দশকে প্রকাশিত বইগুলো হচ্ছে- রুদ্র করোটিতে, বিধ্বস্ত নীলিমা, নিলোকে বসতি, নিজ বাসভূমে। দেশ স্বাধীনের প্রকাশ পায় ‘বন্দি শিবির থেকে’, মাতাল ঋতিকসহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবির ৪৮টি কবিতার বই প্রকাশ পায়। এছাড়া ৮টি শিশুতোষ, গল্পগ্রন্থ ১টি, অনুবাদ কবিতা ৩টি, নির্বাচিত কবিতার চারখন্ডসহ কবির বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৮২টি। বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পান কবি।

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বনানী কবরস্থানে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা, গান ও কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় কবিতা পরিষদ জানায়, কবির দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার জাতীয় কবিতা পরিষদ, শামসুর রাহমান স্মৃতিপরিষদ ও কবি শামসুর রাহমান ফাইন্ডেশন যৌথভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সকাল সাড়ে নয়টায় বনানী কবরস্থানে কবির কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিকেল তিনটায় কবি শামুসর রাহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কবির গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পাহাড়তলী কলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক কবি-সাহিত্যিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হবে। এতে থাকবে শ্রদ্ধা নিবদেন,আলোচনা, কবিতা পাঠ।

(ওএস/এএস/আগস্ট ১৭, ২০১৬)