তানভীর আহমেদ রুবেল,নড়াইল প্রতিনিধি :নড়াইলের মেয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রনব মুখার্জি’র স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে শুভ্রার মামা বাড়ি সদরের তুলারামপুরে দু’দিনব্যাপি ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানসহ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, অচিরেই খুলনা-বেনাপোল-কলকাতা ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এ অঞ্চলের মানুষের পশ্চিমবঙ্গে যাতায়াতের সুবিধার্থে এই ট্রেনলাইন চালু করা হবে। এদিকে, হাইকমিশনার শুভ্রা মুখার্জি ফাউন্ডেশনের উন্নয়নে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এছাড়া তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে নড়াইলবাসীকে শুভেচ্ছা জানান।

শুভ্রা মুখার্জি ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনির, যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টচার্য্য, জেলা প্রশাসক হেলাল মাহমুদ শরীফ, পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম, প্রকৌশলী শৈলেন্দ্রনাথ সাহা, যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ শাহীন চাকলাদার, নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, তুলারামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ, শুভ্রা মুখার্জি ফাউন্ডেশনের পরিচালক অয়ন দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক কার্তিক ঘোষ, শুভ্রা মুখার্জির ছোট ভাই কানাই লাল ঘোষ প্রমুখ।

শুভ্রা মুখার্জির জীবনী থেকে জানা যায়, ১৯৪৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামে বাবা অমরেন্দ্র ঘোষ ও মা মীরা রানী ঘোষের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শুভ্রার শৈশবের প্রথম দিকটা নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামে নিজবাড়িতে (পিত্রালয়) কাটলেও পরবর্তীতে মামাবাড়ি তুলারামপুরে চলে যান। মামাবাড়ি থেকে স্থানীয় চাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরে ১৯৫৫ সালের দিকে মায়ের সঙ্গে ভারতের কলকাতায় চলে যান শুভ্রা। নয় ভাইবোনের মধ্যে শুভ্রা ছিলেন দ্বিতীয়। পরবর্তীতে তার অন্য ভাই-বোনেরা ভারতে চলে গেলেও নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামে বসবাস করছেন শুভ্রার ভাই কানাই লাল ঘোষ।

ভদ্রবিলার পৈতৃক ভিটা ও জমিজমা দেখাশোনা করেন তিনি (কানাই লাল)। শুভ্রার মামাতো ভাইয়েরা বসবাস করছেন তুলারামপুর গ্রামে। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রিধারী শুভ্রা পেশায় ছিলেন শিক্ষক। গাইতে পারতেন রবীন্দ্রসংগীতও। লিখেছেন ‘চোখের আলোয়’, ‘চেনা অচেনায় চীন’, ‘ওঘউওজঅ এঅঘউঐও ওঘ গণ ঊণঊঝ’ (ইন্দিরা গান্ধী ইন মাই আই’স) প্রবন্ধ গ্রন্থসহ গল্প ও ফিচার। শুভ্রা মুখোপাধ্যায় ‘চোখের আলোয়’ গ্রন্থে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, তার (শুভ্রা) বয়স তখন ১৪, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বয়স ২২ বছর। সেই বয়সে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। শুভ্রা ও প্রণব মুখার্জির দুই ছেলে অভিজিৎ ও সুরজিৎ এবং মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি মুন্নি। ভারতে নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত তারা। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট ভারতের নয়াদিল্লির একটি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন শুভ্রা মুখার্জি।






(টিএআর/এস/১৯ আগস্ট, ২০১৬ )