হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : মোঃ সিদ্দিক বয়স মাত্র ১২ বছর। এই বয়সে তার সহপাঠী অথবা বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে হৈ হুল্লোড় বিভিন্ন খেলা নিয়ে মেতে থাকার কথা, কিন্তু সংসারের অভাব-অনটনের কারণেই সিদ্দিক উপজেলার ধারা বাজারের রাস্তার এপাশ-ওপাশ ঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহে নিয়োজিত। প্রতিদিনই জীবন ধারণ আর দু’বেলা দু’মুঠো অন্নের জন্য ঝালমুড়ি বিক্রি করতেও দ্বিধাবোধ করেনি ।

কৌতুহলবশতই কেন নজর পড়ে গেল সিদ্দিকের দিকে। হঠাৎ কথা বলতে বলতেই জানা যায়, ক্ষুদে এই শিশুটি প্রায়ই তিন বৎসর ধরে সংসারের খরচ যোগাতে পড়াশুনার পাশাপাশি ঝালমুড়ি বিক্রির মাধ্যমে উপার্জনের টাকা বাবা-মার হাতে তুলে দেয়। ধারা ইউনিয়নের কয়রাহাটি গ্রামের দেলোয়ার হোসেন’র পুত্র সিদ্দিক। পিতা পেশায় একজন দিনমজুর। সংসারে তিন ভাই, এক বোন ও বাবা-মাসহ ছয় সদস্যের মাঝারি সংসার। সে ভাইবোনের মধ্যে প্রথম সন্তান সিদ্দিক, কয়রাহাটি-লালারপাড় দাখিল মাদরাসা’র পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। রোল নম্বর ১২।

বিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে তাড়াহুড়ো করে চলে আসে চিরচেনা ছুটে চলা ধারা বাজারে দিকে ঝালমুড়ি বিক্রির উদ্দেশ্যে। লেখাপড়া পড়েও কেন তাকে কাজে নামতে হয়েছে প্রশ্ন করতেই তার ঝটপট জবাব। এত বড় সংসার বাবার একলার রোজগারে চলে না। গত তিন বৎসর যাবত পড়াশুনার পাশাপাশি বিদ্যালয় ছুটির পর থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত এলাকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করি। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত কত রোজগার হয় বলতেই আবার জবাব, হয় খারাপ না, দুইশত পঞ্চাশ থেকে তিনশত টাকা এখান থেকে এক দেড়শ টাকা লাভ হয়।

এভাবেই চলে জীবন অধ্যায়ের প্রত্যাহিক রুটিন শিশু সিদ্দিকের। দায়িত্ববোধ থেকে একটু সহযোগিতার হাত প্রসারিত করলে শিশু সিদ্দিক ঝালমুড়ি ওয়ালা থেকে হতে পারে দেশের মেধাবী তরুণ।

(জেসিজি/এএস/আগস্ট ২৫, ২০১৬)