সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : রাইস মিলের ধান সিদ্ধ করার ব্রয়লার ফেঁটে কমপক্ষে ৩০জন শ্রমিক আহত হয়েছে। বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার আলাদিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চারজন শ্রমিককে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তালা উপজেলার আলাদিপুর গ্রামের ব্যবসায়ি জামির আলী খাঁ জানান, দুমাস আগে তিনি একই গ্রামের মোসলেম মোড়লের কাছ থেকে তার রাইস মিলটি ভাড়া নেন। মিলে ৩০ জন শ্রমিক ধান সিদ্ধ ও শুকানোর কাজ করে থাকে। বুধবার ভোর চারটার দিকে আলাদিপুর গ্রামের বাবর আলী মোড়লের স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৫৫) ধান সিদ্ধ করার জন্য ব্রয়লারে (চুলা) পানি ফোঁটাচ্ছিলেন।

এ সময় ব্রয়লার থেকে ধানের কড়াইতে বাষ্প আসার চাবিটি বন্ধ ছিল। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাষ্পের চাপে ব্রয়লার ও পাইপ প্রচন্ড শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে ব্রয়লারটির পানির ব্যারেল ৩০০ গজ দূরে সনে মোড়লের বাড়িতে যেয়ে পড়ে। ব্রয়লার ফেটে আলাদিপুর গ্রামের মোহর আলীর ছেলে জামির আলী (২২), একই গ্রামের বাবর আলীর স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৫৫), আহম্মদ মোড়লের ছেলে বেল্লাল হোসেন (২২) ও যশোর জেলার কেশবপুর সদরের হাকিম সরদারের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৫৫) মারাত্মক জখম হয়।

ব্রয়লার হাউজের এক হাজার ৪০০ ইট বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। এ সময় ইটের আঘাতে ফজলুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, ইসলাম হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, আবুল হোসেন, জহুর আলী, কেনা গাজীসহ ২৬জন কম বেশি আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদেরকে জরুরীভিত্তিতে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী মোসলেম মোড়ল ও আব্দুর রহমান খাঁ জানান, রাইস মিলের ধান সিদ্ধ করার ব্রয়লারের পাইপ ফেঁটে পার্শ্ববর্তী মিল মালিক জামির আলীর ১০০ মণ ধান, ইসলামের ১৫ মণ, আবুল হোসেনের ১০ মণ ধান নষ্ট হয়েছে। এতে দু লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রচন্ড- বিস্ফোরণে ব্রয়লার হাউজের ইট বহু দূর পর্যন্ত ছিটকে যায়। খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, তালা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামসহ অনেকেই ঘটনাস্থলে ছুঁটে আসেন।

তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. প্রতাপ কুমার কাশ্যপি জানান, শ্রমিক জামির হোসেন ও রোকেয়া বেগমের দুটি করে চোখ সম্পূর্ণ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া বেল্লাল ও রাজ্জাকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাদের চারজনকে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর ছিদ্দিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

(আরকে/জেএ/জুন ১১, ২০১৪)