স্টাফ রিপোর্টার :মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনের জন্য আবারও সময় চেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলসুপার প্রশান্ত কুমার বনিক এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রশান্ত কুমার বনিক জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে মীর কাসেম আলীকে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষার আবেদনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি প্রাণভিক্ষা চাওয়ার জন্য আবারও কিছু  সময় চেয়েছেন। তবে সেই সময় কতটা এটা নিশ্চিত করে তিনি কিছু জানান নি।

এ বিষয়ে জেলসুপার সাংবাদিকদের বলেন, মীর কাসেম আলীকে এ সময়টা আর কতটুকু দেয়া হতে পারে সেটা সরকার ও কারা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন। এর আগে বুধবার মীর কাসেমের সঙ্গে কাশিমপুরে সাক্ষাতের পর তার পরিবারের সদস্যরা জানান, তারা এখনই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন না। মীর কাসেমের নিখোঁজ ছেলেকে পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

কাশিমপুর কারাগার থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, ২২ দিন আগে সাদা পোশাকধারী লোকজন আমাদের ছেলে ব্যারিস্টার আহম্মেদ বিন কাসেমকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে গেছে। তিনি শুধু আমাদের ছেলেই নন, মীর কাসেম আলীর মামলার আইনজীবীও। পারিবারিক যে কোনও সিদ্ধান্তে পরামর্শের জন্য পরিবারের লোক হিসেবে তাকে প্রয়োজন।

আয়েশা খাতুন আরও বলেন, আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে সরকারের কাছে আগে আমাদের ছেলেকে চাই। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর সঙ্গে দেখা করতে তিন শিশুসহ পরিবারের ৯ সদস্য বুধবার কারাগারে যান। বুধবার সকালে মীর কাসেমকে রিভিউ আবেদন খারিজের রায় পড়ে শোনানো হয়। রায় শোনার পর কিছুটা চিন্তিত ও চেহারায় উদ্বিগ্নতার ছাপ এবং বিমর্ষ দেখা গেছে।

প্রশান্ত কুমার বনিক আরও জানান, প্রাণ ভিক্ষার জন্য যে সময় তিনি চেয়েছেন সে ব্যাপারে আইনগত উপায়েই প্রক্রিয়া হবে। তার এ সময় চাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। এর আগে মঙ্গলবার সকালে তিনি কারাগারে তার কাছে থাকা রেডিওর মাধ্যমে রিভিউ খারিজ সংক্রান্ত রায় শুনেছিলেন। মঙ্গলবার রাত ১২টা ৪৮ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মীর কাসেম আলীর রিভিউ খারিজ সংক্রান্ত রায়ের কপি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এসে পৌঁছায়। রাত অনেক বেশি হওয়ায় রাতে মীর কাসেম আলীকে তা পড়ে শোনানো হয়নি। বুধবার সকাল সাড়ে ৭ টায় আনুষ্ঠানিকভাবে রায় পড়ে শোনানো হয়।

৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেম আলী কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির কনডেম সেলে বন্দি রয়েছেন। গ্রেফতারের পর ২০১২ সাল থেকে তিনি এ কারাগারে রয়েছেন। ২০১৪ সালের আগে তিনি এ কারাগারে হাজতবাসকালে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দির মর্যাদায় ছিলেন। পরে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তির পর তাকে ফাঁসির কনডেম সেলে পাঠানো হয়।




(ওএস/এস/সেপ্টেম্বর০১.২০১৬)