দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজাবাড়ী :নদীর সাথে এদেশের মানুষের গভীর মিতালী বাক্যটি যেন হারিয়ে গেছে রাজবাড়ীবাসীর মন থেকে। অপরিকল্পিত ভাবে নদীতে বাঁধ নির্মাণ, বালু উত্তোলন আর নদীর পার দখল করার ফলে পদ্মা যেন তাঁর নিজ স্বরূপে ফিরে জানিয়ে দিচ্ছে তার ভয়াবহতা।

এরই মাঝে রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের তিন হাজার মানুষের ঘরবাড়ী নদী গর্ভে বিলিন হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বিশেষ করে রাজাবাড়ী জেলার একমাত্র শহর রক্ষা বাঁধ ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বরাট ইউনিয়নের ওড়াকান্দা নামক স্থানে বাঁধ থেকে ভাঙ্গন প্রায় ৬-৭ ফিট দুরে অবস্থান করায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে রাজবাড়ী জেলাবাসী। নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে বিদ্যালয়, মসজিদ সহ আবাদী জমি কোন কিছুই রক্ষা করতে পারে নাই রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড।

রাজধানীর সাথে যাতায়াতের জন্য দক্ষিণের ২১ জেলার মানুষ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করে থাকে। এরই মাঝে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের চারটি ফেরিঘাটের মধ্যে ১ এবং ২ নং ঘাট দুটি বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বাকি দুইটি ঘাটের মধ্যে ৩ নং ঘাটটি প্রবল স্রোত এবং ভাঙ্গনের কারনে পল্টুন ধরে না রাখার কারণে মাঝে মাঝে বন্ধ রেখে মেরামতের কাজ করে যাচ্ছে বিআইডব্লিউটিসি এমনটি জানিয়েছেন ব্যবস্থাপক মোঃ শফিকুর রহমান। একমাত্র ৪ নং ঘাটটি স্বাভাবিকভাবে যানবাহন পারাপারের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তিনটি ঘাট বন্ধ থাকার কারনে দৌলতদিয়ার জিরো পয়েন্ট থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট লেগে আছে।

রাজবাড়ী পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির পিপিএম বলেন, সবচেয়ে বড় দুচিন্তার কারন কোরবানির পশু। তিনি বলেন সব বিষয় মাথায় রেখে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন বাস্তবতার উপর কারো কোন হাত নেই।

গতকাল ঘাট পরিদর্শনের সময় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নৌ মন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে ঈদের আগেই ঘাট মেরামতের। তিনি আরো বলেন, ফারাক্কার পানির কারনে এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে। তিনি এই বিপর্যয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে ধৈয্য ধারণের অনুরোধ করেন।

এদিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি নাম না প্রকাশ শর্তে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে বলেন, ৩ নং ঘাট যদি ভেঙ্গে যায় তবে কয়ের ঘন্টার মাঝে ৪ নং ফেরিঘাট বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, ৮৭ বছর নদীপারে বসবাস করে যেটুক মনে হচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বিআইডব্লিউটিসি যে ব্যবস্থা নিচ্ছে তাতে করে ফেরিঘাট টিকিয়ে রাখতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।



(ডিবি/এস/সেপ্টেম্বর০৪,২০১৬)