হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : হালুয়াঘাট উপজেলায় দুটি স্থল বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে কয়লা ব্যবসার মন্দাভাব চলমান থাকায় প্রায় ৪ হাজার শ্রমিকের শংকায় কাটছে জীবন। জানা যায়, উপজেলার দুটি স্থলবন্দর যথাক্রমে কড়ইতলী কোল এন্ড কোক ইম্পোর্টাস এসোসিয়েশন ও গোবরাকুড়া আমদানীকারক সমিতি। এর সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক রয়েছে।

যারা শুধুমাত্র কয়লা ব্যবসার সাথে শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। দু দেশের অভ্যন্তরীন সমস্যা কিছুটা লাঘব হলেও কয়লা আমদানির পরিমাণ কম থাকায় এবং অন্যান্য স্থলবন্দরে বিভিন্ন দেশকে আমদানীকৃত কয়লার মূল্য হ্রাস থাকায় এর প্রভাব পরেছে দুটি বন্দরে সংশ্লিষ্ট ৪ হাজার শ্রমিক এবং হালুয়াঘাট শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েক হাজার মোটর যান শ্রমিক ও কর্মচারীর উপর। হালুয়াঘাট একমাত্র ট্রাক অফিসের স্ট্যান্ডটি এই সময়ে শ্রমিকদের কোলাহলে পরিপূর্ণ থাকতো।

বর্তমানে কয়লা আমদানী হ্রাস থাকায় ও বাজার মূল্য উর্ধ্বগতি হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক আগের চেয়ে অনেক কম। বর্তমানে সম¯ত ট্রাকগুলো বসে রয়েছে আর তার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল শ্রমিক অনাহারে অর্ধাহারে জীবন যাপন করছে। ট্রাক অফিসের আশেপাশের দোকানীদের মাঝেও পরেছে এর প্রভাব। শ্রমিকদের স্ত্রী সন্তানদের ভাগ্যে নেমে এসেছে অন্ধকারে গনঘটা। স্থল বন্দর দুটির শ্রমিকের ভাগ্যে কালো অধ্যায় শুরু হয়েছে।

সরজমিনে দুটি স্থল বন্দর পরিদর্শন করলে দেখা যায় চারদিকে কারি কারি কয়লার স্তুপ পড়ে রয়েছে। কিন্তু ক্রেতার কোনো সরব উপস্থিতি নেই। কিছু সংখ্যক শ্রমিককে জড়ো হয়ে বসে থাকতে দেখা যায় এবং তাদের সাথে কথা বললে জানা যায়, তারা একেবারেই নিরুপায় সাংবাদিককে উদ্দেশ্যে করে বলেন আমাদের জন্য কিছু ব্যবস্থা করা যায় কিনা আপনাদের পত্রিকার মাধ্যমে। স্থানীয় দোকান গুলো থেকে বাকি নিতে নিতে এখন আর দোকানিরাও আমাদের কে আর বাকি দিতে চাই না। অলস সময় কাটাতে অনেক সময় প্রশ্নবিদ্ধ কাজে, অনেকে জরিয়ে পড়েছে। অশ্রুসিক্ত কন্ঠে তারা বলেন আমরা কিভাবে বেচে থাকবো। আমাদের দেখার কি কেউ নেই?

কয়লা শ্রমিক সংগঠনের সাবেক সভাপতি মোঃ হাবিবুল মিয়া জানান, দুটি বন্দরে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। যদি বন্দরটি সচল অবস্থায় ফিরে না আসে এদের ভাগ্যে কি ঘটবে তা বলা বাহুল্য। শুনেছি ভারতীয় আদালতে ঐ খানকার পরিবেশ বাদী কয়লা নিয়ে মামলা করেছে যার ফলে কয়লা আমদানী হ্রাস পেয়েছে। আর এর প্রভাব পরেছে দুটি বন্দরে কয়েক হাজার শ্রমিকের উপর। কবে এ বন্দরটি পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে চালু হবে সেই আকুতি জানান।

হালুয়াঘাট উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন জানান, বন্দরে কয়লা আমদানী বন্ধ থাকায় এ প্রভাব সারা বাংলাদেশে পরেছে এবং ট্রাক মালিকেরা সময়মত কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না।

(জেসিজি/এএস/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৬)