স্টাফ রিপোর্টার : তুরষ্কের সঙ্গে বাংলাদেশের ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) করতে চায় বাংলাদেশ। একই সঙ্গে দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি বাড়াতে রুলস অব অরিজিনের শর্ত শিথিলেরও দাবি জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে বৈঠককালে ঢাকায় নিযুক্ত তুরষ্কের রাষ্ট্রদূত দেভরিন উজতুর্কের কাছে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এ আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।

সাংবাদিকদের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তুরস্ক বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার। তুরষ্কের সঙ্গে বাংলাদেশের এফটিএ হলে রফতানি বাড়বে।

‘দুই দেশের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। তুরষ্ক বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ করতে আগ্রহী।’

তিনি বলেন, তুরষ্কের বাজারে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে রুলস অব অরিজিনের শর্ত শিথিল করা হলে দ্বি-পক্ষীয় বাণিজ্য বাড়বে। কিছুদিনের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশনের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে।

‘এ বিষয়ে তুরষ্ক ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছে,’ যোগ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ তুরষ্কে ৭২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। একই সময়ে তুরষ্ক থেকে আমদানি হয়েছে ১৫৮ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।

বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানো হলে অল্প সময়ের মধ্যে দু’দেশের বাণিজ্য দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ৩০ লাখ মানুষের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র দেশের মানুষের জান-মালের ব্যাপক ক্ষতি করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।

‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধীদের নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতার সঙ্গে বিচার করছে। গত জুলাই মাসে তুরষ্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান হয়। সেখানেও নীতি পরিবর্তন করে বিচারের প্রক্রিয়া চলছে।’

‘বাংলাদেশ-তুরষ্কের মধ্যে দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্ক অটুট থাকবে। ভবিষ্যতে তা আরও জোরদার হবে বলেও বাংলাদেশ মনে করে,’ বলেন তিনি।

বৈঠক শেষে তুর্কি রাষ্ট্রদূত দেভরিন উজতুর্ক বলেন, তুরষ্ক ও বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এ সম্পর্ক অটুট আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

‘যে কোনো পরিস্থিতিতেই বাংলাদেশের পাশে থাকবে তুরষ্ক। দুই দেশের বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়েও তুরষ্ক সরকার আন্তরিক। তুরষ্কের সঙ্গে বাংলাদেশের এফটিএ স্বাক্ষর ও রুলস অব অরিজিনের শর্ত শিথিলের বিষয়গুলো আঙ্কারা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।’

তিনি বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই দুই দেশের জয়েন্ট ইকনোমিক কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভাতেই এসব বিষয় চ‍ূড়ান্ত করা হবে। তুরষ্কের সঙ্গে পৃথিবীর প্রায় ১৮টি দেশের এফটিএ আছে, বাংলাদেশের সঙ্গেও না করার কোনো কারণ নেই।

বৈঠককালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মনোজ কুমার রায়, অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) মুন্সী সফিউল হক উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬)