সালমা পারভীন : শিশু একটি পরিবারে নতুন একজন মানুষ। একটি শিশুর প্রথম একটু হাসি কতই না রঙিন করে তোলে জীবনকে। সময়ের সাথে সাথেই তাকে শেখানো হয় সামাজিক আচরণ। সবাই আশা করে শিশুদের আচরণ এমন হবে যেন সকলের প্রশংসা পায়। কিন্তু কখনও কি পরিবারগুলো কি ভেবে দেখে শিশুদের সত্যিকারে শিক্ষা কিভাবে দেয়া উচিৎ।

আপনার আমার আচরণকে লালন করে বেড়ে ওঠে আগামীর শিশুরা। হোক সে স্বচ্ছল পরিবারের বা পার্ক রাস্তার সংগ্রাম করে চলা ছোট্ট শিশু।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য আমাদের আর একটু সংবেদনশীল হওয়া দরকার।

জীবন সজীবতা হারিয়েছে বাঁচার তাগিদে। তার কাছে জীবন মানেই হল অযত্ন আর অবহেলায় আরও একটি দিন। ছুটে চলা দুরন্ত শৈশব যেখানে বড় সাদা কালো।

এসব শিশুদের আসলে কোন কিছুই ঠিকঠাকভাবে হয়ে ওঠে না। হয়ই বা কি করে। ভাগ্য বিড়ম্বিত এই ছেলেটির প্রতি নিদারুন অনিহা। এর মধ্যে কখনও কখনও এর ব্যতিক্রম চোখে পড়ে। কেউ কেউ বাড়িয়ে দেয় সহমর্মিতার হাত।

নিম্নের গন্ডি পেরিয়ে এবার মধ্যবিত্তের দিকে আসা যাক। পাঁচ বছর বয়সেই মাকে হারিয়েছে মম। পায়নি মায়ের আদর ভালবাসা আর মমতার স্পর্শ। তাই মমর এখন সারাক্ষনই মিথ্যের সাথে বসবাস।

মম বলে, আম্মু আমাকে খুব বকা দিত। আমার স্কুলেও যেতে ভাল লাগে না। পড়াশুনা করতেও ভাল লাগে না।

মমকে দেখভালের দায়িত্বে থাকা একজন জানান, ওর কথা বার্তা সব ভাল। কিন্তু নিজের কোন কাজ নিজে করতে পারে না। এমনকি তার বাথরুম ও দাঁত ব্রাশ পর্যন্ত করতে পারে না।

যেকোন ঘটনাই দাগ কাটে শিশুদের মনে। ভেঙে যেতে পারে তার সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ। কাছের বা দূরের মানুষের ব্যবহার ভেঙে দিতে পারে শিশুর কৌতুহলী মনকেও। ঠিক এমনটাই হল। একদিন স্কুল থেকে ফিরে হঠাৎই কথা বন্ধ করে দিলো মম। কি হল কেউ জানে না।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারি অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার বলেন, আমাদের অনেক সচেতন ভাবে কথা বলতে হবে।

আমাদের উচিত যে কথাগুলোতে ওরা আঘাত পাবে সেসব কথা না বলা। অন্যের সাথে তুলনা না করা। বাচ্চারা যে কৌতহলগুলো প্রকাশ করতে চাইবে আমাদের উচিৎ তাদের আলাদা করে সময় দিয়ে সেই কথাগুলো শোনা।

মনোবিদরা বলছেন, একটি শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন মানুষের মানবিক পরিবর্তন। আমাদের কর্তব্য হচ্ছে হাতে হাত ধরে সেই শিশুটির সাথে একটু খানি পথ চলা।