স্পোর্টস ডেস্ক : ম্যাচ এতটা কঠিন হবে কে ভেবেছিল! ২৬৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ম্যাচকে একেবারে নিজেদের হাতের মুঠোয় নিয়ে ফেলেছিলো আফগানিস্তান। অবশেষে আফগানদের হাতের মুঠো থেকে ম্যাচটা বের করে আনলেন সাকিব-তাইজুল-মাশরাফি এবং তাসকিন আহমেদ। শ্বাসরূদ্ধকর একটি জয় উপহার দিলেন তারা বাংলাদেশকে।

শেষ মুহূর্তেই ম্যাচটির মোড় ঘুরলো বাংলাদেশের দিকে। শেষ দিকে এসে তাসকিন আহমেদই হলেন নায়ক। এক ওভারে দুটি এবং শেষ ওভারে আরও দুটি উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের মুষড়ে পড়া দর্শকদের মুখে হাসি ফোটালেন তিনি। বাংলাদেশের করা ২৬৫ রানের জবাবে আফগানিস্তানের ইনিংস গিয়ে অলআউট হলো ২৫৮ রানে। ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় এলো ৭ রানে।

প্রায় ১০ মাস পর ওয়ানডে খেলতে নামলো বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ দিয়ে শুরু ব্যস্ত ক্রিকেট মৌসুম। মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে ২৬৫ রান তুলতেই সব ক’টি উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।

জয়ের জন্য ২৬৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখি দুই আফগান ওপেনার শাহজাদ আহমাদ এবং শাবির নুরি। এরই মাঝে অবশ্য দু’জনের দুটি ক্যাচও মিস করেন বাংলাদেশের দুই ফিল্ডার ইমরুল কায়েস এবং রুবেল হোসেন। শেষ পর্যন্ত সপ্তম এবং অষ্টম ওভারে মাশরাফি এবং সাকিব মিলে ফেরালেন দুই ওপেনারকে।

এরপরই সমস্ত দুশ্চিন্তা ভর করিয়ে দেন হাশমতুল্লাহ শহিদী এবং রহমত শাহ। এ দু’জন ২৬৬ রানের লক্ষ্য পাড়ি দিতে গিয়ে খুব ধীরে, সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে চলছিল। দু’জনের ১৪৪ রানের জুটির ওপর ভর করে আফগানরাও বুনছিল জয়ের স্বপ্ন।

একই সঙ্গে ধীরে ধীরে ম্যাচ থেকে ছিটকে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটান সাকিব আল হাসান। ৪১তম ওভারের দ্বিতীয় বলটিতে এসে পরাস্ত হলেন ৭১ রান করা রহমত শাহ। অফসাইডে বল দিয়েছিলেন সাকিব। ক্রিজ ছেড়ে এসে খেলার চেষ্টা করলেন রহমত শাহ। মিস করলেন বলের ফ্লাইট। ফলে উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো মুশফিকের হাতে বল। মুহূর্তে উইকেট ভেঙে দিতে দেরি করলেন না তিনি। ভাঙলো আফগানদের সেরা জুটিটি।

৪৪তম ওভারে আরেক বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান হাশমতুল্লাহ শহিদীকে ফিরিয়ে দিলেন তাইজুল ইসলাম। উড়িয়ে মারতে গিয়ে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেন ৭২ রান করা হাশমতুল্লাহ। ১১০ বলে ৬টি বাউন্ডারির সাহায্যে এই রান করেন তিনি।

আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবি ২৪ বলে ৩০ রান করে কিছুটা বিপদে ফেলার চেষ্টা করেন বাংলাদেশকে। কিন্তু তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে আউট হয়ে গেলেন তিনি। শেষ দিকে ঝড় তোলা তাসকিন আহমেদের হাতেই বধ হয়ে গেলো আফগানদের ইনিংস। এরই মধ্যে রুবেল এবং মাশরাফিও তুলে নিলেন একটি করে উইকেট।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী তাসকিন আহমেদ ৪টি। মাশরাফি এবং সাকিব ২টি করে। ১টি করে উইকেট নিলেন রুবেল এবং তাইজুল ইসলাম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস : বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ : ২৬৫/১০, ৫০ ওভার (তামিম ৮০, মাহমুদুল্লাহ ৬২, সাকিব আল হাসান ৪৮, ইমরুল কায়েস ৩৭, তাইজুল ইসলাম ১১, মুশফিকুর রহীম ৬, মাশরাফি ৪, সাব্বির রহমান ২, তাসকিন ২, রুবেল ১, সৌম্য ০; দৌলত জাদরান ৪/৭৩, মোহাম্মদ নবি ২/৪০, রশিদ খান ২/৩৭, মিরওয়াইজ আশরাফ ১/৫১, নাভিন-উল হক ১/৬২)।

আফগানিস্তান : ২৫৮/১০, ৫০ ওভার (হাশমতুল্লাহ শহিদী ৭২, রহমত শাহ ৭১, শোহাম্মদ শাহজাদ ৩১, মোহাম্মদ নবি ৩০, আসগর স্টানিকজাই ১০, শাবির নুরি ৯, নজিবুল্লাহ ৭, রশিদ খান ৭, মিরওয়াইজ আশরাফ ৩, দৌলত জাদরান ২, নাভিন-উল হক ০; তাসকিন ৪/৫৯, সাকিব ২/;২৬, মাশরাফি ২/৪২, তাইজুল ১/৪৪, রুবেল ১/৬২)।

ফল : বাংলাদেশ ৭ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা : সাকিব আল হাসান।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬)