টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ ঘাটাইল আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ আদেশ দেন।

এর আগে রবিবার সাংসদ আমানুরের আইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হয়েছে। সংসদ থেকে তাকে অধিবেশনে যোগদানের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। তিনি যেন সংসদ অধিবেশনে অংশ নিতে পারেন সেজন্য জামিন প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ কলেজপাড়া এলাকায় তার বাসার সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর নিহত ফারুক আহমদের স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে। এই মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট আনিসুল ইসলাম রাজা ও ৫ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ আলী নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পরে আদালতে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হয়। এ জবানবন্দিতে টাঙ্গাইল-৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি আমানুর রহমান খান রানা, তার ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ এমপির ঘনিষ্ঠ কয়েকজন এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে তথ্য পায় ডিবি পুলিশ।

এ ঘটনায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এর মধ্যে আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী ও সমির টাঙ্গাইল কারাগারে।

৬ এপ্রিল আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক আমানুর রহমান খান রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ১৭ মে ১০ জনের বিরুদ্ধে হুলিয়া ও মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। ২০ মে পুলিশ সাংসদের টাঙ্গাইল শহরের বাসভবনে অভিযান চালিয়ে মালামাল জব্দ করে। সর্বশেষ আসামিরা হাজির না হওয়ায় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

পরে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টাঙ্গাইল-৩ ঘাটাইল আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানা আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়া। ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬)