আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের সেনাঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনায় দেশে ও দেশের বাইরে চাপের মুখে পড়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কয়েক দিন ধরেই পাকিস্তানের প্রতি একের পর এক বার্তা দিচ্ছেন তিনি। এর মধ্যেই সোমবার সিন্ধু-পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন মোদি।

বৈঠক শেষে তিনি বলেন, রক্ত এবং পানি একসঙ্গে বইতে পারে না। তার এ মন্তব্যের পর দেখা দিয়েছে একাধিক প্রশ্ন। তাহলে কি সিন্ধু-চুক্তি নিয়ে কড়া মনোভাব দেখাতে চলেছে ভারত? দীর্ঘদিনের চুক্তি ভেঙে সিন্ধু নদীর বেশির ভাগ পানি পাকিস্তানকে ব্যবহার করতে দেবে না নরেন্দ্র মোদি সরকার? তবে সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি।

দেশটির গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সোমবার বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্করও ছিলেন। এতে প্রায় ৫৬ বছর আগের সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকেই মোদি মন্তব্য করেন, ‘রক্ত এবং পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না!’

আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৬০ সালের ওই চুক্তি অনুযায়ী ভারতের পশ্চিম দিকের তিনটি নদীর পানি এখনো পাকিস্তান ব্যবহার করে। ওই তিন নদী হল- সিন্ধু, চেনাব এবং বিতস্তা (ঝিলম)। আর অপেক্ষাকৃত পূর্ব দিকের তিন নদী বিপাশা, রবি ও শতদ্রুর পানি ব্যবহার করে ভারত। কিন্তু উরিতে সন্ত্রাসী হামলার পর পরিস্থিতি উল্টো মোড় নিয়েছে।

বৈঠকের একটি সূত্র বলছে, এ বছর ওই ছয় নদীর পানির বেশির ভাগই ভারত ব্যবহার করতে চায়। পূর্ব দিকের নদীর পানি দিয়ে ভারতের কৃষি অঞ্চলের চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। তাই বাকি তিন নদীর পানির বেশির ভাগই ব্যবহার করার যুক্তি দেওয়া হয়েছে।

ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাক প্রেসিডেন্ট জেনারেল আইয়ুব খানের মধ্যে সিন্ধু চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধুর মাত্র ২০ শতাংশ পানি ভারত ব্যবহার করতে পারে। তবে এখন থেকে বেশির ভাগ পানি জম্মু-কাশ্মিরের সেচ এলাকায় নিতে চায় ভারত। এই পানির মাধ্যমে প্রায় ছয় লাখ হেক্টর এলাকাকে সেচের আওতায় আনা যাবে।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৬)