ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সায়াদ ইবনে মোমতাজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছয় ছাত্রকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত সাপেক্ষে এবং মঙ্গলবার আবাসন ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কমিটি এ সিদ্ধান্ত নেয়।

বহিষ্কার হওয়া ছাত্ররা হলেন ফিন্যান্সের স্নাতকোত্তর বিভাগের মো. রেজাউল করিম, মাত্স্যবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সুজয় কুমার কুণ্ডু ও রোকনোজ্জামান, কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র নাজমুল শাহাদাত ও দেওয়ান মুনতাকা মুফরাদকে এবং পশুপালন অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তর চৌধুরী। এর মধ্যে প্রথম তিনজনকে আজীবনের জন্য, পরবর্তী দুজনকে চার বছর বা আট সেমিস্টারের জন্য ও শেষের জনকে দুই বছর বা চার সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৩০ মার্চ চতুর্থ বর্ষের ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিকস বিভাগের একটি কোর্সের ক্লাস পরীক্ষাটি শিক্ষককে বলে পেছানোর জন্য সায়াদকে চাপ দিয়েছিলেন সুজয় ও রোকন। তাদের চাপে একপর্যায়ে তিনি পরীক্ষা হবে না বললেও পরীক্ষা হয় এবং মাত্র দুজন অংশ নেন। শিক্ষক আবার পরীক্ষা নিতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সুজয়ের সঙ্গে সায়াদের বাগবিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে পরের দিন সন্ধ্যায় হলের ২০৫ নম্বর কক্ষে সায়াদকে ডেকে নিয়ে রড, লাঠি, হকিস্টিক দিয়ে নির্মমভাবে পেটানো হয়। পিটুনিতে সায়াদ বমি করেন ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। ওই কক্ষে তখন সুজয়, রোকনসহ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

ওই রাতে সায়াদকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে তিনি ময়মনসিংহ শহরের ট্রমা সেন্টারে মারা যান। কে বা কারা তাঁকে ট্রমা সেন্টারে নিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সায়াদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করে মামলা করা, দোষী ব্যক্তিদের আজীবন বহিষ্কার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২ এপ্রিল থেকে আন্দোলন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তাঁরা।

(এইচআর/এপ্রিল ০৯, ২০১৪)