গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে শাকসবজির আবাদে ক্ষুদ্র, বর্গা ও প্রান্তিক চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। চাষিরা সবজির আবাদে বদলে ফেলেছে ভাগ্য।

জানা গেছে, কেবল রংগাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের করলা চাষি আমজাদ আলী ১ বিঘা জমিতে করলা আবাদ করে খরচ বাদ দিয়ে লাভ করেছেন ৫০ হাজার টাকা। একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের পেপে চাষি আলী মিয়া ৫০ শতক জমিতে পেঁপে আবাদ করে লাভ করেছেন প্রায় ৬০ হাজার টাকা।

ওই এলাকার আকবর আলী, আব্দুস সাত্তার,আনিছুর রহমান, এরশাদ আলী, সদরের আমিনুল ইসলাম, ফজলুর রহমানসহ শত শত ক্ষুদ্র চাষি সবজি আবাদ করে স্বাবলম্বি হয়েছে।

এসব চাষিরা জানান, এক সময় তাদের সংসার চলতো ধার-দেনা করে। কিন্তু সবজি চাষের ফলে তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে। তারা এখন সকলেই স্বাবলম্বী।

চাষিরা জানান, এখন তাদের শাকসবজি বিক্রির জন্য হাট-বাজারে যেতে হয় না। ব্যাপারিরা বাড়ির আঙ্গিনা থেকে শাকসবজি ক্রয় করে নিয়ে যান। এসব ব্যাপারিরা ঢাকা চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট সহ বিভিন্ন স্থানে সবজি সরবরাহ করেন।

এ ছাড়াও খরিপ-১ মৌসুমে ঢেড়স, পটল, চিচিংগা, পুই শাক, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, পানি কুমড়া, চাল কুমড়া ইত্যাদি রবি মৌসুমে মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাল শাক, পালং শাক, পুই শাকসহ অন্যান্য সবজি আবাদ করে প্রায় একই ধরনের লাভ পাচ্ছেন এসব কৃষক। ফলে অনেকেই এখন শাক সবজির আবাদের প্রতি যত্নশীল হয়েছেন।

এখন উত্তরাঞ্চলের মহাসড়কের পাশে দাঁড়ালে দেখা যায়,কালীবাড়ী বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের পাশে ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে সবজি ক্রয়ের জন্য। রাত থেকে ভোর হতে হতে এসব ট্রাক সবজি নিয়ে দেশের অন্যান্য স্থানে চলে যাচ্ছে। বেশ ক’বছর থেকে এ অঞ্চলে সবজি চাষ অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা বেশি করে সবজি চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।

রংপুর ও রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় রবি ও খরিপ মৌসুমে দেড় লাখ হেক্টর জমি থেকে ২৮ লাখ ৫০০ মেট্রিক টন করলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পুই শাক, মুলা, টমেটো, কুমড়াসহ বিভিন্ন শাকসবজি কৃষকদের ঘরে উঠেছে। প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন হয়েছে ১৯ মেট্রিক টন । এ পরিমাণ উৎপাদিত পণ্যের সর্বনিম্ন বাজার মূল্য প্রায় ৪,৩৪০ কোটি টাকা। প্রতি কেজি শাক সবজির দাম সর্ব নিম্ন ১২ টাকা হলে প্রতি মেট্রিক টন বিক্রি হয়েছে ১২ হাজার টাকায়। সেই হিসেবে দুই মৌসুমে সাড়ে ২৮ লাখ মেট্রিক টন শাক সবজির মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪,৩৪০ কোটি টাকা।

(এসআইআর/এএস/অক্টোবর ১০, ২০১৬)