লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়ায় চালের বাজার বেসামাল হয়ে পড়েছে। দু’সপ্তাহের ব্যবধানে  চালের দাম কেজি প্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা করে বেড়েছে। বিশেষ করে ২৫ টাকা দরের মোটা চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে। চালের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা চরম বিপাকে পড়েছেন।

উপজেলার লোহাগড়া বাজারের চাউল পট্টিতে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দু’সপ্তাহ যাবৎ লোহাগড়ায় চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। হঠাৎ করে চালের মূল্য বৃদ্ধির জন্য স্থানীয় ব্যবসায়িরা মিল মালিকদের দায়ী করছেন। প্রতি কেজি ইরি ২৮ ও ২৯ চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা দরে, যা এর আগে ৩৩ টাকা দরে পাওয়া যেত। ৪০ টাকা কেজির মিনিকেট চাল বর্তমান ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বাসমতি চাল ৪০ থেকে বেড়ে ৫২ টাকায় উঠেছে। চালের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষজনদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

দেশের অন্যান্য জেলা-উপজেলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু হলেও তালিকা প্রণয়নে জটিলতার কারণে লোহাগড়ায় সে কর্মসূচী এখনো চালু হয়নি। তার ওপর বাড়তি মূল্যে সাধারণ মানুষজনদের চাল কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

লোহাগড়া পৌরসভার মসজিদ পাড়ার চায়ের দোকানি কামরুল ইসলাম বলেন, বাজার গুলোতে সরকারি উদ্যোগে কোন নজরদারীর ব্যবস্থা নেই। এ কারণেই লাগামহীন ভাবে চালের দাম ব্যবসায়িরা ইচ্ছামত বৃদ্ধি করছে।

লক্ষীপাশা এলাকার মৎসজীবি তাপস বিশ্বাস বলেন, চালের বাজার বেসামাল হয়ে পড়লেও মূল্য নিয়ন্ত্রণে কারও মাথা ব্যাথা নেই। পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছি।

কচুবাড়িয়া গ্রামের আদিবাসী ভগিরথ কর্মকার ক্ষোভের সাথে বলেন, সরকার দেশব্যাপী খাদ্য বান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচী চালু করলেও তা আমাদের মতো মানুষজনদের কোন উপকারে আসে না। বর্ষা-বাদলের এই দিন গুলোতে বাড়তি মূল্যে চাল কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

চালের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগড়া বাজারের চাল ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান, গণেশ সাহাসহ একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, এখানকার ব্যবসায়ীরা কুষ্টিয়ার খাজানগর, যশোরের চৌগাছা এবং দিনাজপুর থেকে চাল কিনে আনেন। মোকামে চালের সরবরাহ কম হওয়ায় চালের দাম বেড়েছে। তা ছাড়া, চালের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে মিল মালিকরাও দায়ী।

এসব বিষয়ে কথা হয় লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজার সাথে। তিনি বলেন, বাজার মনিটরিং এর জন্য একটি কমিটি রয়েছে। তা ছাড়া, স্থানীয় পৌরসভাও বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করে থাকে। তিনি বাজার মনিটরিং এর বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

(আরএম/এএস/অক্টোবর ১২, ২০১৬)