ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীর ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী সরদার পাড়া গ্রামের হাজ্বী নকিম উদ্দিন পোল্ট্রি খামারের মালিক এস এম রবিউল ইসলাম সোনালী মুরগী পালন করে আজ স্বাবলম্বি। ইতোমধ্যেই তাঁর সফলতায় একজন লাভবান খামারী হিসেবে এলাকায় সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে।

রবিউল সোনালী মুরগীর ডিম প্রতিটি ১৫-১৬ টাকা দরে বিক্রি করছেন। রবিউল এখন এলাকার বেকার যুবকদেরও সোনালী মুরগী পালনে উৎসাহিত করছেন।

রবিউল ইসলাম জানান, যুব উন্নয়ন থেকে পোল্ট্রি, গবাদী পশু ও মাছের উপর তিন মাসের প্রশিক্ষণ নিজের বসত বাড়িতেই ২০০০ সালে লেয়ার জাতের ২৫০টি মুরগী পালন শুরু করেন। বর্তমানে তাঁর খামারে ১৯ হাজার মুরগী রয়েছে । এর মধ্যে সাদা লেয়ার ৭ হাজার, লেয়ার মুরগী ৫ হাজার, হ্যাচিং ডিম সোনালী মুরগী ২ হাজার এবং রোষ্ট সোনালী মুরগী ৫ হাজার। বিগত ১ বছর ধরে তার খামারে সোনালী মুরগী ডিম উৎপাদন হচ্ছে।

তিনি জানান, পাবনার ভাই ভাই হ্যাচারীর পরামর্শে ডিমের জন্য সোনালী মুরগী পালন করে অধিক মুনাফা অর্জন হচ্ছে। এখন প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩’শ সোনালী মুরগীর ডিম প্রতিটি ১৫ হতে ১৬ টাকা দরে বিভিন্ন হ্যাচারীর কাছে তিনি বিক্রি করছেন। ডিম বিক্রির টাকায় অর্জিত মুনাফা হতে কয়েক বিঘা জমি ক্রয় করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। রবিউল ইসলাম আরো জানান, এলাকার বেকার যুবকদের নিজ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজ করছেন। মুরগীর বিষ্ঠা দিয়ে পরিবেশ বান্ধব একটি বড় মাপের বায়োগ্যাস প্লান্ট করেছেন। এই বায়োগ্যাসে নিজের পরিবারের রান্নার কাজ শেষ করে অন্য নয়টি পরিবারে সাপ্লাই দিয়ে জ্বালানী সংকট দূর করেছেন।

রবিউল বলেন, সহজ শর্তে কোন ব্যাংক-বীমা কিংবা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋণ পেলে আগামীতে একটি হ্যাচারী স্থাপনের ম্যাধ্যমে খামারটি আরো সম্প্রসারিত করার স্বপ্ন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, চাকরি নামের সোনার হরিণের পেছনে না ঘুরে সোনালী মুরগী চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। এতে বেকারত্ব ঘুচবে এবং আর্থিক ভাবেও লাভবান হওয়া যায়। তিনি শিক্ষিত বেকার যুবকদের সোনালী মুরগী চাষ করার জন্য আহ্বান জানান।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোস্তফা জামান বলেন, রবিউল ইসলাম সোনালী মুরগী পালন করে ঈশ্বরদীর একজন মডেল খামারী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। বাজারে অন্য মুরগীর ডিম প্রতিটি ৬ থেকে ৭ টাকা দরে বিক্রি হলেও সোনালী মুরগীর প্রতিটি ডিম ১৫ থেকে ১৬ টাকা দরে বিক্রিতে তিনি অধিক মূনাফা অর্জন করছেন। এখন হ্যাচারীর মালিকেরা রবিউলের সোনালী মুরগীর ডিম কিনে নিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে বিক্রি করছেন। রবিউলের দেখা দেখি ওই এলাকার যুবকদের মধ্যে সোনালী মুরগী পালনের প্রতিযোগিতা চলছে।
নিয়ম মেনে রবিউল খামারের কার্যক্রম পরিচালনা করলে আরো বেশী লাভবান হবেন বলে কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

(এসকেকে/এএস/অক্টোবর ১৫, ২০১৬)