নওগাঁ প্রতিনধি : বুধবার দিবাগত রাতে নওগাঁর মহাদেবপুরে সাবেক এক সেনা সদস্য যৌতুকের দাবিতে তার স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বুজরকান্তপুর গ্রামে। বৃহস্পতিবার এব্যাপারে মহাদেবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে বিগত প্রায় ১২ বছর আগে ওই গ্রামের মৃত কছিম উদ্দিনের পুত্র সাবেক সেনা সদস্য আব্দুস সালাম পার্শ্ববর্তী পত্নীতলা উপজেলার নোদন গ্রামের ফরিদ উদ্দিনের কন্যা ফারজানা (৩০) কে বিয়ে করে ফারজানার ভাই ফিরোজ আলী জানান, বিয়ের পর থেকেই আব্দুস সালাম তার বোন ফারজানাকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছিল। বিয়ের সময় যৌতুকের টাকা পরিশোধ করা হলেও নানা অজুহাতে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করার পাশাপাশি ফারজানাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করতো সালাম। বোনের সুখের কথা ভেবে মাঝে মধ্যেই সালামের বিভিন্ন সময়ে অন্যায় দাবী পূরণ করা হয় বলে ফারজানার ভাই ফিরোজ জানায়। পূর্বের মতো গত ৪ জুন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য সালাম আরো ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে তার স্ত্রী ফারজানাকে অকথ্য নির্যাতন করে। এ সময় সালামের নির্যাতন উপেক্ষা করে ফারজানা তার বাবার বাড়ি থেকে দাবীকৃত টাকা এনে দিতে অস্বীকৃতি জানালে সালাম ও তার মা রহিমা বেওয়া, ভাই কালাম, কালামের স্ত্রী মিনা ফারজানাকে আবারও শারিরীক নির্যাতন করে। তাদের ওই নির্যাতনে ফারজানা গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে প্রথমে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৬ জুন সিরাজগঞ্জ এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দীর্ঘ ৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বুধবার রাতে (১১ জুন) সে মারা যায়। বুজরকান্তপুর গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফারজানার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্নসহ তার নাক ও কান দিয়ে রক্ত ঝরছিল। এ ঘটনায় ফারজানার পিতা ফরিদ উদ্দিন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য সালামসহ ওই চার জনকে আসামী করে মহাদেবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এনায়েত উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আঘাতের কারনেই ফারজানার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

(বিএম/এএস/জুন ১২, ২০১৪)