সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : শিক্ষকদের স্থান বাবা মায়ের পরে। তাঁরা একজন শিশুকে তিল তিল করে শিক্ষা দিয়ে প্রাথমিক স্তরের গণ্ডি পার করে গোটা জাতিকে বিশ্বের দরবারে পরিচিতির উন্মেষ ঘটায়। অথচ সেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতিনিয়ত খাজরা ইউপি’র চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমের মত জনপ্রতিনিধির হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়। পালিয়ে বেড়াতে হয় নির্যাতিত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাহাজ্জাহানকে। মামলা তুলে না নিলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তার স্বজনদের।

এমনকি বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতিকে দিয়ে কাল্পনিক অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি করা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া হবে না। অবিলম্বে রাজাকারের ছেলে ডালিম চেয়ারম্যান ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে খাজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। নইলে আমরণ অনশনের মত বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় সাতক্ষীরার আশাশুনি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন।

আশাশুনি উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে বক্তব্য দেন আগরদাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ আলাউদ্দিন, বড় দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুল হক, বুধহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জুলহাজ ইসলাম, পশ্চিম দরগাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মনোয়ারা খাতুন, খাজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাহাজ্জাহান আলী, আশাশুনি সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী তানিয়া খাতুন, নাদিয়া সুলতানা প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমের মনোনীত বিদ্যোৎসাহি সদস্যের নাম তালিকা করে সাংসদের কাছে না পাঠানোয় গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে স্কুল থেকে অপহরণ করা হয় ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাহাজ্জাহান আলীকে। পরে তাকে চেয়ারম্যানের বাড়িতে আটক রেখে নির্যাতন চালান চেয়ারম্যান ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা। এ সময় তার কাছ থেকে কয়েকটি সাদা অলিখিত কাগজে সাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। দাবি করা হয় পাঁচ লাখ টাকা। একপর্যায়ে গভীর রাতে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই প্রধান শিক্ষক বাদি হয়ে চেয়ারম্যান ডালিমস ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে চেয়ারম্যান ও তার সন্ত্রাসীদের ভয়ে ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে যেতে পারছেন না। স্বজনরাও রয়েছেন হুমকিতে। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।


(আরএনকে/এএস/অক্টোবর ২২, ২০১৬)