স্টাফ রিপোর্টার : ভাবতেই অবাগ লাগে, ছেলে শিশু দিয়ে পর্নোগ্রাফি তৈরি! এটা রাশিয়া কিংবা জার্মানি নয়! এটা বাংলাদেশ। আর এখানেই ছেলে শিশুদের দিয়ে পর্নো ছবি তৈরি করে তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওয়েব সাইটে বিক্রি করা হচ্ছে।

এ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে শিশু সাহিত্যিক টিপু কিবরিয়াকে (৪৭) গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু এবং শাহরুল ইসলাম নামে তার দুই সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার (অর্গানাইসড ক্রাইম) আশরাফুল ইসলাম এ কথা জানান।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরির সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চক্র জড়িত রয়েছে বলে ইন্টারপোল বাংলাদেশ পুলিশকে জানায়। এরপর চক্রটিকে ধরার জন্য সিআইডি দায়িত্ব পান। গত মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিশু সাহিত্যিক টিপু কিবরিয়াকে রাজধানীর মুগদার একটি পর্নো স্টুডিও থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় খিলগাঁওয়ের তারাবাগের তার নিজ বাসা ও স্টুডিওতে অভিযান চালিয়ে কম্পিউটার হার্ডডিস্ক, দামি স্টিল ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, সিপিইউ, ল্যাপটপসহ শতাধিক পর্নো সিডি, ৭০ পিস লুব্রিকেটিং জেল ও ৪৮ পিস আন্ডার গার্মেন্টস সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।’

তিনি জানান, মুগদায় তার স্টুডিওর ভেতর থেকে তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। সেখান থেকে ভুক্তভোগী ১৩ বছরের এক শিশুকেও উদ্ধার করা হয়। শিশুটিকে বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা রিমান্ডের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছে। তাতে পর্নোগ্রাফি তৈরি করার কথা স্বীকারও করেছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অ্যাডিশনাল ডিআইজি শাহ আলম জানান, টিপু কিবরিয়ার নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে দেশে শিশুদের নিয়ে পর্নোগ্রাফি তৈরি ও সিডি করে বিদেশের বাজারে বিক্রি করছে। এর বিনিময়ে তারা আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফি নির্মাণ সিন্ডিকেটের কাছ থেকে ‘ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন মানি এক্সচেঞ্জ’ এর মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে টাকাও নিয়ে আসছে।

তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে জার্মানি থেকে ৭০০ ডলার করে কয়েক দফায় টাকাও উত্তোলন করেছেন আসামিরা। সৌদি আরব থেকে প্রায় ৩০০ থেকে ৫০০ রিয়াল করে উত্তোলন করেছেন। এ ছাড়া ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আরব আমিরাত, রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশের টাকাও তারা গ্রহণ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘সাধারণত তারা পথশিশুদেরকে লোভ দেখিয়ে আস্তানায় নিয়ে যেত। সেখানে কয়েকদিনধরে তাদের আটকে রেখে পর্নো তৈরির কাজ করানো হতো। এ কাজের বিনিময়ে ৩০০-৪০০ করে টাকা পেতো শিশুরা। ২০০৫ সাল থেকে এই কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে তারা। ’

(ওএস/এস/জুন ১২, ২০১৪)