প্রবীর সিকদার


বিএনপিকে যারা জামায়াত ছেড়ে রাজনীতির মাঠে আসার পরামর্শ দেন, তাদের প্রতি আমার কৌতুহলের শেষ নেই! কেন যে তারা এই পরামর্শের ডালি নিয়ে মাঝে মাঝেই অবতীর্ণ হন, সেটাও বেশ রহস্যের। একাত্তরের বাস্তবতায় জামায়াত ভয়ঙ্কর। কিন্তু পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ের বাস্তবতায় বিএনপি ভয়ঙ্কর।

মুক্তিযুদ্ধের পর জামায়াত একটি মীমাংসিত বিষয় ছিল। রাজনীতিতে জামায়াত নিষিদ্ধ ছিল। যুদ্ধাপরাধে জড়িত জামায়াত নেতাদের বিচার চলছিল। গোলাম আযম পালিয়ে যাওয়ায় তার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছিল। এই বিএনপি জামায়াতকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছে; যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া ভণ্ডুল করেছে; পালিয়ে যাওয়া গোলাম আযমকে ফিরিয়ে এনে নাগরিকত্ব দিয়েছে।

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী, নিজামি-মুজাহিদকে মন্ত্রী বানিয়েছে বিএনপি। সেই বিএনপি জামায়াত ছেড়ে এলেই কি ধোয়া তুলসীপাতা হয়ে যাবে! একাত্তরের বাংলাদেশকে যে বিএনপি মিনি পাকিস্তান বানিয়েছিল, সেই অপকর্মের দায় কে নিবে!

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে নেতৃত্ব দেওয়ায় জামায়াত আজ বিচারের কাঠগড়ায়; নিষিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে ওদের রাজনীতি। আর পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে জামায়াতের একাত্তরের কুকর্ম ঢেকে ফেলার মতো দুর্ধর্ষ অপকর্ম করেও বিএনপি পার পেয়ে যাবে, তা কি করে হয়!

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একাত্তরের অনেক নৃশংসতাকে হার মানায়। নৃশংস ওই অপকর্মও বিএনপির। রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবেই সেই বিএনপিকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতেই হবে; এটা সময়ের দাবি। নইলে জামায়াতের ফের ভয়ঙ্কর আত্মপ্রকাশ ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে।