প্রবীর সিকদার


টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক। বঙ্গবন্ধুর নাতনি; বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার মেয়ে। টিউলিপ ব্রিটেনের পার্লামেন্ট সদস্য তথা ব্রিটেনের এমপি। এই পরিচয়টি নিশ্চয়ই কম নয়।

টিউলিপ সিদ্দিক যখন ব্রিটেনের এমপি নির্বাচিত হন তখন সারাদেশ উল্লাস প্রকাশ করেছিল ; বঙ্গবন্ধুর রক্ত আজ বিশ্বরাজনীতিতে ! সেদিন আমি উল্লাস করিনি ; ভেতরে ভেতরে কষ্ট পেয়েছি, বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারের সেবা বঞ্চিত হবে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ! বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা কি দেশসেবা করে বিশ্বরাজনীতির অংশ হননি!

যদিও সেদিন গড্ডালিকা প্রবাহে সামিল থাকার অভিনয় হিসেবে আমিও হয়তো ফেসবুকে টিউলিপকে একটি শুকনো অভিনন্দন জানালেও জানাতে পারি ! বলতে দ্বিধা নেই, এই দেশে নিরাপত্তা সংকটের কারণেই টিউলিপকে ব্রিটেনে অনেক কষ্টকর লড়াই করে বড় হতে হয়েছে। আর সেই সূত্রেই তার সেখানে থেকে যাওয়া ও এমপি হওয়া। এই এমপি হওয়া টিউলিপের জন্য কতোটা গর্বের তা আমার জানা নেই; কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে লজ্জাটা আমাদের, আমরা টিউলিপের দুর্দিনে ওকে আশ্রয় দিতে পারিনি; আশ্রয় খুঁজতে গিয়েই টিউলিপ আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছেন! তিনি আজ ব্রিটেনের এমপি, এই পরিচয় বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারের সঙ্গে কতোটা যায়, সেই প্রশ্ন খুব বেশি অমূলক নয়।

টিউলিপ ব্রিটেনের জন্য কিংবা ব্রিটেনের রাজনীতিতে যতো অবদানই রাখুন, তিনি সেখানে কতোটা মূল্যায়িত হবেন, সেটা সময় বলবে, সময় চলে গেলে। টিউলিপ ব্রিটেনের এমপি হিসেবে যতোটা সমাদৃত, তার চেয়ে অনেক বেশি সমাদৃত বঙ্গবন্ধুর নাতনি হিসেবে। সেই টিউলিপ বাংলাদেশের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের কর্মী হলে আরও বেশি উজ্জ্বল হতে পারতো বাংলাদেশ ও টিউলিপ। টিউলিপ কি এই সত্য উপলব্ধি করেন?

আমি বিশ্বাস করি টিউলিপ একদিন সেই সত্য উপলব্ধি করবেনই। সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিটেনে তার নিরাপত্তা ভাবনা আমাকে সেই ইঙ্গিতই দেয় ! হয়তো সেদিন তিনি এই ভুল বুঝতে পেরে বাংলাদেশের মাটিকেই শেষ ঠিকানা মনে করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের কর্মী হবেন, কিংবা যখন তিনি ওই সত্য উপলব্ধি করবেন, তখন হয়তো বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের সেবা করবার কোনও সুযোগ ও সময় থাকবে না তার।