চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহরে মির্জাপুর ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুল হামিদ কর্তৃক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি ও কলেজের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাতে। রাতেই বিষয়টি টের পেয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অধ্যক্ষকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে কলেজ প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ মিছিল করে কলেজে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

পরে শুক্রবার কলেজটির গভর্নিং বডির সভাপতি মো. আব্দুল কাদের বাদী হয়ে চাটমোহর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছেন। জিডি নং-১৫৫।

জানা যায়, মির্জাপুর ডিগ্রী কলেজের দ্বিতল অফিস ভবনের পূর্বপাশে প্রায় ২৫ বর্গফুট এলাকা জুড়ে পুড়িয়ে ফেলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি ও কলেজের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের ধ্বংসাবশেষ ছাই ভষ্ম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য জহুরুল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য ও ২নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি রুহুল আমীন ও বর্তমান ইউপি সদস্য হাসেন আলী জানান, কলেজের গুরুত্বপূর্ন কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলার কথা শুনে কলেজে গিয়ে পুড়ে যাওয়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবিসহ কাগজপত্রের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাই। তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করেন।
কলেজটির গভর্নিং বডির সভাপতি হাজী মো. আব্দুল কাদের কর্তৃক দায়েরকৃত সাধারণ ডায়রী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ গুরত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলেন। সম্প্রতি কলেজে অভ্যন্তরীণ অডিট হয়। উক্ত অডিট রিপোর্টে দেখা যায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের প্রায় ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। টাকা আত্মসাতের বিষয়ে কলেজের গভর্নিং বডি জবাব চাইলে সে জবাব না দিয়ে কলেজের গুরুত্বপূর্ণ কাগজ গোপনে পুড়িয়ে ফেলেছে।

অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হামিদ জানান, ‘কলেজে কাগজপত্র পোড়ানো হয়েছে ঠিকই, তবে তা উচ্ছিষ্ট কাগজপত্র।’ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের ছবি পোড়ানো প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’
এ বিষয়ে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন সাখো জানান, ‘বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের ছবি পোড়ানোর খবর খুবই দুঃখজনক।’ এ ঘটনা সত্য হলে প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তিনি।

থানার ওসি একরামুল হক সরকার জিডির সত্যতা স্বীকার করে বলেন ‘বিষয়টি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।’

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও মো. মিজানুর রহমান জানান, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। শনিবার থেকে যেহেতু টেস্ট পরীক্ষা, তাই আমি কলেজের তালা খুলে দিতে ওসি সাহেবকে বলেছি। শনিবার ইউএনও স্যার আসলে তদন্ত কমিটি করে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

(এসএইচএম/এএস/নভেম্বর ০৪, ২০১৬)