গোলাম কবির বিলু, রংপুরের মিঠাপুকুর থেকে ফিরে:পীরগঞ্জের পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুরের পদ্মপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি মাত্র ১জন শিক্ষক দিয়ে চলছে। ফলে ক্লাস হচ্ছে না, সামনে সমাপনী পরীক্ষা নিয়েও উদ্বিগ্ন ওই এলাকার অভিভাবকরা। বিদ্যালয়টির ৩ সহকারি শিক্ষকের মধ্যে ১জন ডেপুটিশনে, ১জন বিদেশে এবং ১জন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় একমাত্র শিক্ষক শুধু অফিসিয়াল কার্যক্রমেই সীমাবদ্ধ থাকছেন।

সূত্রে জানা গেছে, মিঠাপুকুর উপজেলার পদ্মপুকুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি প্রায় ৭ বছর ধরে শুন্য। ওই পদে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্বে রয়েছেন শাহীন মিয়া। অপর সহকারি ৩ শিক্ষকই মহিলা। তাদের মধ্যে শাম্মী আখতার বর্তমানে ১ মাসের অনুমোদিত ছুটি নিয়ে বিদেশে (মরক্কো) আছেন। এর আগেও তিনি ৪ মাসের অনুমোদিত ছুটি নিয়ে (বিগত ২০১৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই পর্যন্ত) প্রায় ৩ বছর পর বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পরে গত মাসের ২৭ অক্টোবর ১ মাসের ছুটিতে আবারো বিদেশে পাড়ি জমান। সহকারি শিক্ষিকা নাসিমা বেগম সাড়ে ৩ বছর আগে (২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল) ডেপুটেশনে রংপুর সদরের জুম্মাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেছেন। তিনি মিঠাপুকুর থেকেই বেতনভাতা উত্তোলন করছেন। অপর সহকারি শিক্ষক নাজনীন বেগম চলতি বছরের ১৮ জুন থেকে ৬ মাসের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন। সহকারি শিক্ষক নাসিমা বেগম মোবাইলে জানান, সিস্টেম আছে জন্যেই ডেপুটেশন নিয়েছি। সামনের জানুয়ারিতে বদলীর চেষ্টা করবো। বিদ্যালয়টিতে (পদ্মপুকুর সরঃ প্রাঃ বিঃ) যদি শিক্ষক সংকট থাকে, তবে প্রধান শিক্ষক তো ডেপুটেশনে শিক্ষক নিতে পারেন।

সূত্র আরও জানায়, বিদ্যালয়টির প্রাক প্রাথমিক শ্রেণিতে ২৫ জন, ১ম ও ২য় শ্রেণিতে ৪৫ জন করে, ৩য় শ্রেণিতে ৫০ জন, ৪র্থ শ্রেণিতে ৩০ জন এবং ৫ম শ্রেণিতে ২৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীন মিয়া জানান, শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই বিদ্যালয়ে আসে, কিন্তু ক্লাস না হওয়ায় মাঠে খেলাধুলা করে বাড়ী ফিরে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এবারে ১৮ জন সমাপনী পরীক্ষা দিবে। তারাও বেশী ক্লাস করতে পারেনি। আমি উপবৃত্তির মোবাইল ব্যাংকিংয়ের তথ্য ফরম পুরণ আর অফিসিয়াল কাজকর্ম করায় ক্লাস নিতে পারছি না। অভিভাবকরাও প্রতিদিনেই শিক্ষক আনার জন্য আমাকে চাপ দিচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিভাবকরা ক্ষেদোক্তি প্রকাশ করে বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্কুলের পাহারা দেয়ার কাজ করছে। সন্তানদের স্কুলে পাঠালেও ক্লাস না হওয়ায় আমরা পরীক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এ ব্যাপারে মিঠাপুকুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শায়লা ইয়াসমিন বলেন, উল্লেখিত বিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষকের মধ্যে একজন ডেপুটেশনে রংপুর সদরে আছেন। উনি (নাসিমা) অধিদপ্তর-মিনিষ্ট্রি থেকে ডেপুটেশন নিয়ে এসেছেন। একজন বহিঃদেশে আছে, সে ৩ বছর পর দেশে আসার পর তাকে (শাম্মী আখতার) যোগদান করার অনুমতি দেইনি। পরে ডিপিইও স্যারের নির্দেশে তাকে যোগদান করে নিয়েছি। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মানতে বাধ্য। অপর একজন শিক্ষক মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন। ওই বিদ্যালয়ে ১জন শিক্ষক দেয়ার জন্য আমি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলেছি।





(জিকেবি/এস/নভেম্বর ০৭, ২০১৬)